‘নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো নয়’, ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’- গত তিন মাস ধরে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এমন কথা বলে এলেও এবার ‘যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করে’ নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মী সম্মেলনে জামায়াতের এই অবস্থান তুলে ধরেন নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, আমি বর্তমান উপদেষ্টা সরকারকে বলব, আপনারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার কাজ শেষ করে তারপরে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। এটা যদি না হয়, তাহলে এ নির্বাচন তো নির্বাচন হবে না।
প্রসঙ্গত, জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রশ্নে এই বক্তব্য একেবারেই নতুন। এতদিন তারা নির্বাচনের চেয়ে সংস্কারকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছিল। এমনকি অগাস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে বিএনপি নির্বাচন চাইতে থাকলে তার সমালোচনাও করেছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। এরপর বিএনপি ক্রমাগতভাবে জামায়াতকে আক্রমণ করেছে, এমনকি ১৯৭১ সালে দলটির ভূমিকার কথা তুলে ধরে তাদেরকে স্বাধীনতাবিরোধীও বলা হয়েছে।
জামায়াত আমির সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই সরকার দেশ শাসনের জন্য আসেনি, দেশ শাসনের সুষ্ঠু পথ বিনির্মাণের জন্য তারা এসেছে। তাদের কাজ হচ্ছে, গত তিন নির্বাচনে জাতি যা ‘বঞ্চিত’ হয়েছে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবেন আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি।
এই বক্তব্যের দুই মাস পর জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমানের বক্তব্যে নির্বাচন প্রশ্নে দলটির অবস্থান পরিবর্তনেরই বিষয়টিই ফুটে উঠে। তিনি বলেন, উপদেষ্টা সরকারের একটি মাত্র কাজ নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে প্রস্থান করা। এটা ইউনিভার্সাল ট্রুথ। এটাই কাজ তাদের, অন্য কোনো কাজ নয়।
জামায়াত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে ৪১ দফা প্রস্তাব দিয়েছে জানিয়ে সংস্কার কেন দরকার, সেই বিষয়েও একটা ব্যাখ্যা দেন জামায়াত নেতা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচন নিয়ে ‘ডাকাতি’ করেছে। ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন করেছে, কাউকে না পেয়ে নিজেদের মধ্যেই খেলার আয়োজন করেছিল। আপনি যে নির্বাচন করবেন, দেশে সে ব্যবস্থাটা যদি থাকে তাহলে তো নির্বাচন করবে। যদি নির্বাচনি ব্যবস্থা না থেকে থাকে তাহলে তো ব্যবস্থাটা চালু করতে হবে। এর জন্য সংস্কার দরকার হচ্ছে।