বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরের সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে গাজিপুরে হত্যার প্রতিবাদে কেব্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেব্ব চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের বিভিন্ন উপজেলায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছে বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত। এসময় আন্দোলনকারীদের সরাতে টিয়ারশেল ছোড়ে ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সেনাবাহিনীও মাঠে তৎপর ছিল৷
সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে নগরীর ওয়াসার মোড়, জিইসি, মুরাদপুর মোড়, অক্সিজেন মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ১ নম্বর গেইট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন অন্দোলনকারীরা।
তবে সকালে পৌনে ১০টার দিকে মুরাদপুরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলে মুরাসপুর-অক্সিজেন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷
এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা মুরাদপুর মূল সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় নেতা-কর্মীরা। এসময় সেনা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে মাঠে নামে৷ এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
পরে আন্দোলনকারীরা একটি অংশ সুন্নিয়া মাদ্রাসা গলির ভেতর ঢুকে পড়ে৷ এক পর্যায়ে সংঘর্ষ সুন্নিয়া মাদ্রাসার গেইট পর্যন্ত পৌছে যায়৷ এসময় বেশ কিছু লোকজনকে লাঠি হাতে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিতে দেখা যায়৷ পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ আশপাশের এলাকা ও বিভিন্ন ভবন থেকে অন্তত ১০ জনকে আটক করে।
এর কিছুক্ষন পর আন্দোলনকারীদের একটি অংশ মিছিল নিয়ে জিইসির মোড়ে সড়ক অবরোধ করলে সিডিএ এভিনিউর রাস্তার উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও আন্দোলনকারীরা নগরীর অক্সিজেন মোড় ও বন্দর এলাকার সল্টগোলা ক্রসিংয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসে সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
আন্দোলনকারী সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হায়দারাবাদ এলাকার একটি মসজিদের ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে গাছে বেঁধে মারধর করার পর সকাল ১০টার দিকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ২৮ এপ্রিল ভোরে তিনি কারাগারে মারা যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজকের (৫ মে) কর্মসূচি ছিল তিন ঘণ্টা সড়ক অবরোধ। এদিকে, এই অবরোধের কারণে অফিসগামী যাত্রী ও স্কুল শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মিডিয়া সেলের প্রধান ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে লাঠিয়াল বাহিনী অতি উৎসাহী হয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে’।
এদিকে আমাদের বাঁশখালী প্রতিনিধি জানিয়েছে, উপজেলার গুণাগরী চৌমুহনী এলাকায় আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে আহত অনেকেদের দাবী পুলিশের পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়৷
পটিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছে, উপজেলার কাগজিপাড়া ও শান্তির হাট এলাকায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে আন্দোলনকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়৷
এসিকে সকাল ১০টা থেকে সীতাকুণ্ডের বগুলা বাজার, কদমরসুল, ভাটিয়ারী এলাকায় ‘সর্বস্তরের সুন্নি জনতা’ ব্যানারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এছাড়া জেলার হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলায়ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নেতা-কর্মীরা।