নাসিরনগরে একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এসময় ডাকাতেরা লাশের সঙ্গে থাকা স্বজনদের মারধর করে নগদ অর্ধলক্ষাধিক টাকা ও প্রায় ১০টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতের হামলায় নারীসহ ৯ জন আহত হন।
ভুক্তভোগীরা জানান, পূর্বভাগ ইউনিয়নের মুকবুলপুর গ্রামের সত্তরোর্ধ্ব বয়সী ছবদর আলী ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মিরপুর আহসানিয়া ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মারা যান। রাতে তার স্বজনরা লাশ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি নাসিরনগরের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
পথে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় এলে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল সড়কে গাছ ফেলে অ্যাম্বুলেন্সটির গতিরোধ করে। একপর্যায়ে গাড়ি ভাঙচুর করে লাশের সঙ্গে থাকা নারীসহ ৯ জনকে পিটিয়ে আহত করে।
এ সময় তাদের ব্যবহৃত ১০টি মোবাইল ফোন ও লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে যায়। শুধু ডাকাতি নয়, লাশের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয় যা স্বজনদের ব্যথিত করেছে।
নিহতের ছেলে পূর্বভাগ ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলমগীর মিয়া বলেন, টাকা পয়সা ও মোবাইল নিছে দুঃখ নাই। কিন্তু আমার মৃত বাবার লাশের ওপর হামলা করেছে ডাকাতরা। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
ভুক্তভোগী আজহারুল ইসলাম দুর্জয় জানান, এই রাস্তাটা ক্রমশ চলাচলের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে। ঢাকা থেকে রাতে নিরাপদে নাসিরনগর পর্যন্ত আসতে পারলেও নাসিরনগর থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার সাহস পাওয়া যায় না। এর থেকে নাসিরনগরের পূর্ব অঞ্চলের মানুষ কবে মুক্তি পাবে?
ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনজীবী রেজাউল হক আমজাদ জানান, তারা কেবল ডাকাতি করেই ক্ষান্ত হয়নি, মৃতের ওপরও আক্রমণ করেছে- ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ স্টেশন থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে হবে ঘটনা স্থল। প্রায়শই চিহ্নিত স্পটে এমনটা ঘটছে। আপনাদের পুলিশের টিম কোথায় কাজ করছিল তখন?
নাসিরনগর থানার ওসি খায়রুল আলম বলেন, ডাকাতির ঘটনার খবর পেয়েছি। রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে কী কী নিয়েছে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেই জায়গাটি অপরাধপ্রবণ এলাকা। অনেকদিন আগেও সেখানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।