পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে ইসলাম উদ্দিন (৩০) নামের এক জুলাই যোদ্ধাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে একজন অতিরিক্ত উপকমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সিলেট নগরীর লামাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত জুলাইযোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন নগরীর শেখঘাট জিতু মিয়ার পয়েন্ট এলাকার নুর মিয়ার ছেলে। তিনি অটোরিকশাচালক হলেও বর্তমানে চায়ের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।
স্থানীয়রা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ইসলাম উদ্দিন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। আন্দোলনের সময় মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হন। এখনো মাথায় ও হাতে স্প্লিন্টার রয়েছে। ফলে তিনি অটোরিকশা চালাতে পারেন না। জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি ছোট চায়ের দোকান চালান।
দইসলাম উদ্দিনবলেন, প্রতিদিনের মতো শনিবার ফজরের পর দোকান খুললে এএসআই জসিম এসে ‘এত সকালে দোকান খোলা কেন’ জানতে চেয়ে মারধর শুরু করেন।
জোর করে ভ্যানে তুলতে গেলে তিনি জানান, ‘আমি একজন গেজেটভুক্ত জুলাই যোদ্ধা। আন্দোলনে আহত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় বসে থাকতে পারি না, তাই এই দোকান দিয়েছি। আমাকে জেলে দিলে পরিবার না খেয়ে মরবে।’
একপর্যায়ে এএসআই জসিম বলেন, ‘তুই যোদ্ধা! তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’—এই বলে কিল, ঘুষি, থাপ্পড় মারতে মারতে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সঙ্গে থাকা এক কনস্টেবলের হস্তক্ষেপে এএসআই জসিম ও অন্য পুলিশ সদস্যরা আমাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যান। পরে চিকিৎসার জন্য ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি হই।’
অভিযুক্ত এএসআই জসিমের বক্তব্য জানার জন্য কয়েকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করে কেটে দেন। এমনকি খুদে বার্তা পাঠিয়ে সাড়া মেলেনি।
ওসমানী হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘ইসলাম উদ্দিন সকালে এসে ভর্তি হয়েছেন। আশঙ্কাজনক কিছু নয়। সিটি স্ক্যানসহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ডাক্তাররা দেখছেন। কালকে রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে কী অবস্থা।’
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপকমিশনার (উত্তর) মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযুক্ত এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর-ক্রাইম) সাহাদত হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’