পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ জাহিদ-৩ থেকে নদীতে পড়ে যাওয়া শিশু শ্রমিক ওসমান গণিকে (১২) জীবিত উদ্ধার করেছে জেলেরা। ওই লঞ্চটি গলাচিপা উপজেলার কাকড়ার চর সংলগ্ন আগুনমুখা নদী অতিক্রমকালে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে, ওই লঞ্চ শ্রমিক নদীতে পড়ে যাওয়ার পর উদ্ধার না করে লঞ্চ চালিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় জেলেরা।
জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া শিশু ওসমান জাহিদ-৩ লঞ্চের বাবুর্চির সহযোগী হিসেবে দুই মাস ধরে কাজ করছে। তার বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া এলাকায় এবং বাবা মৃত ইমাম উদ্দিন খা।
লঞ্চশ্রমিক ওসমান গণি বলেন, রোববার বিকেলে কোড়ালিয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছাড়ার আধাঘন্টা পর দড়ি দিয়ে বাধা বালতি দিয়ে নদী থেকে পানি উঠানোর সময় ঝুঁক রাখতে না পেরে পড়ে যায়। নদীতে পড়ে যাওয়ার সময় লঞ্চের বাবুর্চি দেখেছিল তাকে। কিন্তু তাকে উঠায়নি। লঞ্চ চালিয়ে চলে গেছে। সে অনেকক্ষণ সাঁতার কাটে এবং ডাকচিৎকার দেয়। পরে জেলেরা তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে।
জানা গেছে, ঘটনার ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে ওসমানকে সাতার কাটতে দেখে জুয়েল মাতুব্বরের মাছ ধরার ট্রলারের জেলেরা। পরে তাকে উদ্ধার করেন তারা। রাতে গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি তুলারাম গ্রামের কামাল মাতুব্বরের হেফাজতে রাখা হয়।
জাহিদ-৩ লঞ্চের বাবুর্চি মোঃ শামিম ইসলাম জানান, তার দেশের বাড়ী শরীয়তপুর জেলায়। ওর বাবার নাম জানিনা। আগে অন্য লঞ্চে কাজ করছিল। ঢাকার সদরঘাটে বসে কয়েকদিন আগে আমার সাথে কাজ করতে চেয়েছিল। তারপর থেকে আমার সাথে সহকারী হিসাবে কাজ করছে জুয়েল। তিনি জানান, আজ রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। প্রায় আধাঘন্টা পর সে গোসল করতে লঞ্চের পিছনে যায়। যাবার সময় ওকে বার বার নিষেধ করেছি সাবধানে গোসল করিস, নদীতে কিন্তু স্রোত বেশি।
তিনি জানান, কিছুক্ষন পরে ওকে না দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি করি। এক পর্যায়ে অনেক দূরে ওকে ভাসতে দেখি। তখন পর্যন্ত লঞ্চটি থামানো ছিল কিন্তু নদীতে স্রোতের কারণে উল্টো দিকে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু ওর আশপাশেই নৌকা দেখতে পেরেছি। পরে বিকালে সুপারভাইজার বলছে যে, তাকে পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি। শিশুটি বর্তমানে একজনের জিম্মায় আছে। তারপরেও কেন কিভাবে পড়ে গেল সে বিষয়েও আমরা খোজ খবর নিচ্ছি।
-বাবু/ফাতেমা