ঈশ্বরদীতে বছরের প্রথমদিন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাচ্ছে না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের চাহিদা ছিল ১ লাখ ৮১ হাজার ২০০। শিক্ষা অফিসে বই এসে পৌঁছেছে ৬৯ হাজার। যা উপজেলায় প্রাথমিকের চাহিদা অনুযায়ী ৩৮ শতাংশ ।এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কোনো বই এখনো আসেনি। অন্য বইও দেওয়া হয়নি শতভাগ।
অন্যদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বইয়ের চাহিদা ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬০টি। শিক্ষা অফিসে বই এসে পৌঁছেছে ১ লাখ ৩৭১টি। মাধ্যমিকের শতকরা ৫৪ শতাংশ বই এসেছে। এছাড়া মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বইয়ের চাহিদা ৮২ হাজার ১৫৫টি। বই এসেছে ৫৭ হাজার ৯৫টি। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ৭১ শতাংশ বই এসেছে। উপজেলার ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২৩টি মাদরাসায় এসব বই বরাদ্দ করা হয়েছে।
মাধ্যমিকে বই প্রদান করা হয়েছে আগে থেকেই আর শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) উপজেলার ১০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১০৩টি বেসরকারি প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেনে এসব বই বরাদ্দ দেওয়া হয়। মাতৃছায়া কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিকা সুলতানা পারভীন বলেন, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সরকার বিদ্যালয়গুলোতে বই পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছিল। সে অনুযায়ী আজ বই পেয়েছি। কিছু বই এখনো আসেনি। আশা করি, শিগগির চলে আসবে। দাশুড়িয়া প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ সুবর্ণা অধিকারী বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথমদিন বই তুলে দেওয়ার জন্য সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সেজন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাই।
এ বছর কিছু বইয়ের স্বল্পতা রয়েছে, আশা করি সেটি দ্রুত চলে আসবে। ঈশ্বরদী কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি লুৎফর রহমান জানান, এ বছর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বই উৎসবের দিন নতুন বই পাচ্ছে না। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বই এখনো এসে পৌঁছায়নি। শিক্ষা অফিসাররা আমাদের বলেছেন, হতাশার কিছু নেই। শিগগির বই চলে আসবে। আশা করি শিক্ষার্থীদের এ বিষয়টি বুঝিয়ে বললে তারা বুঝবে।
সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতি পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে আমাদের বই বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সব বই ও পঞ্চম শ্রেণির তিনটি করে বই পেলেও তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কোনো বই এখনো পর্যন্ত পাইনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত সব বই এসে পৌঁছায়নি। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বই এখনো আসেনি। আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। আশা করি, শিগগির সব বই পেয়ে যাবো। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার বলেন, মাধ্যমিক শ্রেণির ৫৪ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ৭১ শতাংশ বই এসেছে। এরই মধ্যে বই বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলোতে পৌঁছানো হয়েছে। যেসব বই এখনো শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছায়নি আশা করি, দুই-একদিনের মধ্যে সেগুলো চলে আসবে। আশা করছি, আগামীকাল উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই উৎসব উদযাপন হবে।
-বাবু/এ.এস