মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫ ৩ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫
যমুনায় বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, আতঙ্কে এলাকাবাসী
কোরবান আলী তালুকদার, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
প্রকাশ: সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২, ৪:২৮ PM
গত কয়েকদিনে পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ইতিমধ্যে কয়েক দিনের ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক বসতভিটা। যমুনার এমন ভাঙনে দিশেহারা পুরো এলাকাবাসী। হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী চিতুলিয়া পাড়া গ্রাম, নদী রক্ষা বাঁধ হিসেবে ব্যবহারের উচুঁ সড়ক সহ অসংখ্য স্থাপনা। গত কয়েক বছরের ভাঙনে যমুনা পূর্ব পাড়ের খানুরবাড়ি, বেপারি পাড়া, কষ্টাপাড়া, ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়া এলাকার হাজার হাজার পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি ও ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

এদিকে চলতি বছরে বন্যার প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সে সময় নিজেদের বসতভিটা রক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে প্লাস্টিকের বস্তা ফেলেছে স্থানীয়রা। পানি কমে গেলে নদী ভাঙন কিছুটা কমে আসে। সে সময় তারা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার দাবি জানান কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গত কয়েকদিন ধরে ঐ এলাকায় আবার নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী চিতুলিয়া পাড়া অংশে প্রায় ৫'শ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও ঘর-বাড়ি। তাদের সামনে ভেঙে যাচ্ছে বসতভিটা। বুকফাঁটা আত্মনাত নিয়ে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে পরিবারের লোকজন। চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে এসব মানুষ। তাদের এই অসহায়ত্ব দেখার যেন কেউ নেই। এরমধ্যে অনেকে আবার ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র অন্যত্র সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কারো কারো আসবাবপত্র সহ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

ভাঙন কবলিত এলাকার আব্দুল কাদের বলেন, এবছর বর্ষা মৌসুমে আমার একটি ঘর নদীতে ভেঙে যায়। গত তিনদিন আগে আমার বাকি দুইটি ঘরও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় থাকবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি। আমার মতো আরো অনেকে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের এখানে জিও ব্যাগও ফেলত তাহলে আজকে আমার মতো শত শত পরিবার নিঃস্ব হতো না।

চিতুলিয়া পাড়া গ্রামের শাজাহান মিয়া বলেন, আমার চোখের সামনেই আমার বসতভিটা ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিলনা। সকল কিছু নদীতে ভেসে গেছে। এখনো প্রতিদিন ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হচ্ছে। ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে, এভাবে কয়েকদিন ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভূঞাপুরের যমুনার পূর্ব পাড়ের চিতুলিয়া অংশে ভাঙনের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। প্রাথমিকভাবে ভাঙনরোধে ঐ অংশে জিও ব্যাগ ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে স্থানী বাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা কথা বলেছি।

-বাবু/ফাতেমা
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত