বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫ ১২ আষাঢ় ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষক কর্তৃক স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক,বগুড়া
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২, ৫:০৫ PM
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় কলেজ শিক্ষক কর্তৃক স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগে উঠেছে। 

এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এবং ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বগুড়ার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাদী। 

অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। সেই সাথে অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওসিকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কয়দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করতে হবে তা জানানে হয়নি বলেও জানান তদন্ত কমিটির প্রধান আব্দুর রশিদ। এসপির নির্দেশে ওই ধর্ষণ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কে। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের শিক্ষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুলকে (৪৮) গত বছরের অক্টোবরে ধুনট উপজেলার একটি এলাকায় বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন। ওই বাসার মালিকের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ওই ছাত্রীর মা-বাবা পেশাগত কারণে বেশির ভাগ সময় বাসার বাইরে থাকেন। ওই শিক্ষকের স্ত্রীও কর্মসূত্রে দিনে বাইরে থাকেন। এই সুযোগে মুরাদুজ্জামান একদিন কৌশলে ওই স্কুলছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে মুঠোফোনে ছবি তোলেন। এরপর ওই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করেন।

১২ মে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী চিৎকারে দেয়। এ সময় স্বজনেরা ছুটে হলে মুরাদুজ্জামান পালিয়ে যান। এরপর গোপনে ধারন করা ওই ছাত্রীর কিছু ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন মুরাদুজ্জামান। পরে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গত ১২ মে ধুনট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ মুরাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার ও অশালীন ভিডিও ধারণ করা মুঠোফোন জব্দ করে। মুরাদুজ্জামান বর্তমানে ওই ধর্ষণ মামলায় বগুড়া জেলা কারাগারে আছেন।

বাদীর লিখিত অভিযোগে থেকে জানা যায়, মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা নিজেই। ১৮ মে আসামি মুরাদুজ্জামানকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর হেফাজত থেকে আরও একটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। ওই মুঠোফোনে পাওয়া কয়েকটি অশালীন ভিডিও ক্লিপ সিডিতে কাট করে নিয়ে খালি ফোন দুটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানো হয়। অভিযোগে বলা হয় আসামিপক্ষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা মামলার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করেন। গত ১৯ মে জব্দ করা মুঠোফোন দুটি তিনি আদমদীঘি থানার একজন উপপরিদর্শক যিনি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ তাঁর নিকট পাঠিয়ে ফোনে থাকা সব ভিডিও ক্লিপ ও তথ্য মুছে ফেলা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

জানতে চাইলে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মামলাটির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল। মুঠোফোন দুটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠানোও হয়েছে। এরপরও তদন্ত যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্তভার ডিবির কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

-বাবু/ফাতেমা

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত