রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫ ৫ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার ২০ জুলাই ২০২৫
এমপিও ভুক্তির দাবি এবং প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের আসায়
২৩৩ কিলোমিটার পদযাত্রা শুরু প্রতিবন্ধী শিক্ষক জাহিদের
এস.এম. আকাশ, পিরোজপুর
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২, ৬:৩৩ PM
একটি পা অচল ও একটি চোখ দৃষ্টিহীন। হাত দুটিও প্রায় অচল। ঘরে তার বৃদ্ধ বাবা শাহজাহান মোল্লা মানষিক রোগী। বৃদ্ধা মা নানা রোগে আক্রান্ত। বাবা, মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে জাহিদুলের দিন। শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে।

কিন্তু বিনা বেতনে কতদিন চাকরী করা যায়! তাই প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভূক্তির দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাত লাভের আশায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানী থেকে ঢাকার পথে পদযাত্রা শুরু করেন বিদ্যালয়টির প্রতিবন্ধী শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে ২৩৩ কিলোমিটার পায়ে হেটে গণভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। জাহিদুল ইসলাম জানান, নিজের শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছি। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা জীবন কতটা কষ্টের হয় তা আমি জানি। তাই ২০১৮ সালে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি আমরা প্রতিষ্ঠা করি। সরকারের সকল ধরণের নীতিমালা মেনে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনায়লয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য একাধিকবার ডিও লেটার প্রদান করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ে। 

তারপরেও কোন কাজ হয়নি। আমরা ২১ জন শিক্ষক কর্মচারী বিনা বেতনে ১৫৩ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই। তাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে অর্থ কষ্টে বিদ্যালয়টি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। আমরা শিক্ষক কর্মচারীরা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছি। সরকারি ভাবে আমাদের কোন ধরণের সহায়তা দেয়া হয় না। তাই যাতে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সহ এধরণের সকল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোকে অনতিলম্বে স্বীকৃতি ও এমপিওভূক্ত করা হয় সে দাবি নিয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই। তার দেখা পেলে আশা করি তিনি আমাকে খালি হাতে ফেরাবেন না।

ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আহাদুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে নিয়মিত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পাঠদান চলছে। তবে বর্তমানে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও বিদ্যালয়ের সার্বিক খরচ মেটাতে পারছি না। বিদ্যালয়টি প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে ১৫৩ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। আমাদের বিদ্যালয়ের মতই সারাদেশে কয়েক শতাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা কোন বেতন ভাতা পাচ্ছে না। তাই এই বিদ্যালয়গুলো দ্রুত এমপিওভুক্ত করা জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার লুৎফুন্নেসা খানম জানান, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হওয়া খুব জরুরী। আমি প্রতিবন্ধী শিক্ষক জাহিদুল ইসলামের পদযাত্রার সফলতা কামনা করছি।

বাবু/জেএম

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত