নদী ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার এক মাস যেতে না যেতেই তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে জিও ব্যাগ ফেলায় সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের কারখানা নদীর ভাঙনকবলিত বাহেরচর বাজার খেয়া ঘাট থেকে চর রঘুনদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত (৩০০ মিটার) বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য সরকার ৯৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ১২ সেপ্টেম্বর কাজ শেষ হয়। মেসার্স লুৎফর রহমান নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করে।
রোববার (১৬ অক্টোবর) সরেজমিনে ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ জিও ব্যাগ নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় ওই জায়গা ফের ভাঙনের কবলে পড়েছে। কিছু কিছু জিও ব্যাগ ঢিলা হয়ে গেছে। এলোপাতাড়িভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। নদীর ঢেউয়ে ওই ব্যাগগুলোও হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সাইদুল নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী অভিযোগ করেন, নিয়ম অনুযায়ী জিও ব্যাগে বালু ভরা হয়নি। প্রত্যেকটি জিও ব্যাগে ১৫০ কেজি করে বালু ভর্তি করার কথা থাকলেও করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ কেজি। তাও আবার কাদাবালু। যার ফলে পানির ঢেউয়ে কাদা ধুয়ে গিয়ে ব্যাগ ঢিলেঢালা হয়ে গেছে। এলাকার লোকজন শুরু থেকেই বাধা দিলেও ঠিকাদারের লোকজন তা কর্ণপাত করেননি। এর ফলে ওই এলাকায় কয়েকশ পরিবার, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাকা বেড়িবাঁধ কাম সড়ক হুমকির মুখে রয়েছে।
কাছিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, সম্প্রতি আমি ওই এলাকায় যাইনি। তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকে জানলাম। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখবো। এ রকম কিছু হয়ে থাকলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। এ ব্যাপারে ঠিকাদার লুৎফর রহমান বলেন, কোনো অনিয়ম করা হয়নি। নিয়ম মেনেই ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার আলম বলেন, এটি স্থায়ী কোনো প্রকল্প নয়, অস্থায়ী প্রকল্প। কারখানা নদীর ভাঙনের কবল থেকে বাজার, স্কুল ও জনপথ রক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
বাবু/জেএম