ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) উপজেলা সদরের থানা রোডে মোল্লাবাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নয়ন মিয়া (২২) নামে এক ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৬জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্দি দে (৩২), উপ পরিদর্শক আফজাল হোসেন (৩০) ও বিকিরণ চাকমা (৩২), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩) ও বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬)।
নিহত নয়ন মিয়া উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে। তিনি সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ সভাপতি।
এদিকে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির দুই কর্মী রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমানকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় বিএনপির মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলা সদর এলাকায় ডক্টর সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে প্রচারপত্র বিলি করেন। প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে মোল্লাবাড়ি থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রতাবগঞ্জ বাজার, বাঞ্ছারামপুর থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা অতিক্রম শেষে পূণরায় মোল্লাবাড়ির মসজিদের সামনে গিয়ে জড়ো হয়। সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশ জড়ো হয়। পুলিশ এ সময় সায়েদুজ্জামান কামালকে আটক করতে যায়। এক পুলিশের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি থেকে একপর্যায়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় নয়ন নামে এক কর্মীর পেটে গুলি লাগলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া পথে মারা যান তিনি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহের ৯০-৯১ সালের সাবেক ভিপি ডক্টর সায়েদুজ্জামান কামাল বলেন, প্রায় ১ হাজার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কুমিল্লার বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করি। কোনরকম উস্কানি ছাড়াই পুলিশ অতর্কিত গুলি ছোড়ে। এতে ছাত্রদল নেতা নয়ন গুলিবিদ্ধ হয়।
এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, বিকালে বিএনপির একশ থেকে দেড়শ নেতাকর্মী আকস্মিক মিছিল নিয়ে থানার সামনে জড়ো হয়। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তারা ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। সেখানে থাকা টহল দলের দুই কনস্টেবলের কাছ থেকে তারা অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কনস্টেবলরা এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছি।
-বাবু/এ.এস