পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের সেনাবাহিনী নিয়ে আচরণ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিদায়ী সেনাপ্রধান কামার জাভেদ রশিদ বাজওয়া। বুধবার এক বক্তৃতায় তিনি এই আহ্বান জানান। আগামী ২৯ নভেম্বর ৬ বছরের দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যাচ্ছেন কামার বাজাওয়া। সেনাপ্রধান হিসেবে বুধবার প্রদান করা ভাষণ তার শেষ পাবলিক ভাষণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ডনের খবরে বলাা হয়েছে, পাকিস্তানের ‘প্রতিরক্ষা এবং শহীদ দিবস’ এর বক্তব্যে বিদায়ী সেনাপ্রধান রাজনীতিকদের ‘সেনাবাহিনী বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি’র সমালোচনা করে দেশের স্বার্থে সামনের দিকে অগ্রসরের আহ্বান জানান।
১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে নিহতদের স্মরণে পাকিস্তানে প্রতি বছর ৬ সেপ্টেম্বর ‘প্রতিরক্ষা ও শহীদ দিবস’ উদযাপন করা হয়। কিন্তু এ বছর বন্যার কারণে দিবসটি ওই দিন পালন করা হয়নি। বক্তব্যের শুরুতে কামার বাজওয়া বলেন, আমি শিগগিরই অবসরে যাচ্ছি। পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করে বাজওয়া বলেন, ‘বিশ্বে সব থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ভারতের সেনাবাহিনী। অথচ তাদের জনগণ সেনাবাহিনীর কদাচিৎ সমালোচনা করে। ভারতের সেনাদের তুলনায় পাকিস্তানের সেনারা রাতদিন জাতির সেবায় ব্যস্ত থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তা সত্ত্বেও আমরা প্রতিনিয়ত সমালোচনার মুখোমুখি হই।’
এর বড় কারণ গত ৭০ বছর ধরে রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা সংবিধান পরিপন্থী। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী, কখনও রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না সিদ্ধান্ত নেয়। এ বিষয়ে অবস্থান এখনো তেমন আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কামার বাজওয়া বলেন, সেনাবাহিনীর সমালোচনা করা রাজনৈতিক দল এবং দেশের জনগণের অধিকার। কিন্তু ভাষা ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত। সেনাবাহিনী সম্পর্কে ইমরান খান ‘ফলস ন্যারেটিভ’ তৈরি করেছেন ইঙ্গিত দিয়ে বাজওয়া বলেন, সেখান থেকে আবার বের হয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
বক্তব্যে ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি দিয়ে পাকিস্তানের বিদায়ী সেনাপ্রধান বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধ নিয়ে কিছু বিষয় সংশোধন করতে চাই। ১৯৭১ সালে সামরিক নয়, রাজনৈতিক ব্যর্থতা ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে ( বর্তমান বাংলাদেশ) আমাদের সেনাবাহিনী সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল।
সূত্র: ডন, জিও
বাবু/এসআর