আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশে কোনো বাধা দেওয়া হবে না। ওই সমাবেশের আগে যাতে কোনো ধরনের পরিবহন ধর্মঘট না হয় সেজন্য শাজাহান খান এমপি ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর গোর-এ শহীদ ময়দানে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭৫ সালে অমানবিকভাবে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। পৃথিবীতে এমন জঘন্যতম হত্যাকান্ড আর ঘটে নাই। ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ছিলেন জিয়াউর রহমান, আর ২১ আগস্টের গ্রেনেড ও বোমা হামলার পরিকল্পনায় ছিলেন হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উদার। তিনি উদার বলেই আজকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও বেগম খালেদা জিয়া বাড়িতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থাকতে অনুমতি দিয়েছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনার বাড়ি তো পাশের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ও সম্মেলন দেখে যান। কথায় কথায় বলেন আপনাদের সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুরে এসে দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হাড়ি, পাতিল, বিছানা, বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ থাকে মশার কয়েলও, হায়রে নাটক।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে খেলা হবে। এবার খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মত নির্বাচন আর হবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সময়ে রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। সে সময় একটা নিরপেক্ষ ভোট হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মারামারি করবেন না। আপনারা উস্কানি দিবেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিন্তু মাঠ ছেড়ে দেয় নাই। আপনারা আমাদের উপর হামলা করবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব। এটা কি হয়? আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি ও পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ডিসেম্বরে বিএনপির সমাবেশের আগে ও পরে আপনারা পরিবহন ধর্মঘট দেবেন না। কিন্তু তারপরও তারা তিন দিন আগে থেকেই ঢাকায় হাড়ি, পাতিল ও মশার কয়েল নিয়ে অবস্থান নিয়ে নাটক করবেন। পরিবহন শ্রমিক নেতা যারা রয়েছেন, আপনারাও কোন পরিবহন ধর্মঘট ডাকবেন না।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও শাজাহান খান, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, শিবলী সাদিক এমপি ও এ্যাড. জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই এমপি। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী।
বাবু/জেএম