রাজধানীর গুলশান-১-এ গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশে আলফা স্টোরে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি এবং দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতের ঘটনায় গাড়িচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫ জনের নামে গুলশান থানায় একটি মামলা করেছেন।
রোববার দিবাগত মধ্যরাতে গুলশান থানায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু,আরিফ হোসেন, তার ভগ্নিপতি মনির হোসেনসহ তিন জনকে পুলিশ আটক করেছে।
এদিকে, আজ সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক শাহিন মোল্লা তিন আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক সৈয়দ মোস্তফা রেজা নূর ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আজ সোমবার ডিএমপির গুলশান থানার ওসি (অপারেশন) আমিনুল ইসলাম মামলা দায়ের এবং আসামি গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দায়েরকৃত মামলার আসামিরা হলেন– ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু, ওমান প্রবাসি আরিফ হোসেন, তার ভগ্নিপতি মনির হোসেন, মিন্টুর সহযোগী শরিফুল ও হুমায়ুন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টরা বলছে, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুই (৪৬) তার লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে গুলি করেছেন। তার লাইসেন্স করা পিস্তলটি পুলিশ জব্দ করেছে। এদিকে, এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল ওয়াহিদের সঙ্গে তার দুই সহযোগী মো. আরিফ হোসেন (২৪) ও মনির আহমেদকে (৩৫) আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা দোকানমালিক হাবিবুর রহমান আলিম (৩৫) ও স্থানীয় দোকানি মো. খলিল খানকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ।
ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, রোববার বিকাল ৪ টার দিকে বিকাশ করে টাকা না দেওয়ায় ওমান প্রবাসী আরিফ হোসেনকে আটক করেন গ্লোরিয়া জিন্স ক্যাফের পাশের একটি বিকাশ দোকানের মালিক হাবিবুর রহমান আলিফ। এরপর পরিচিতদের ফোন করেন আরিফ। ফোন পেয়ে মনির আহমেদ ও মিন্টুসহ চার-পাঁচ জন ঘটনাস্থলে এসে আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু দোকানিরা বাধা দিলে ওয়াহিদ গুলি ছোড়েন। তার ছোড়া গুলিতে গাড়িচালক আমিনুল ইসলাম এবং রহিম নামে এক ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় আরিফ হোসেন, তার ভগ্নিপতি মনির হোসেন ও মিন্টুকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে রোববার রাতেই গুলশান থানায় গাড়ি চালক আমিনুল বাদী হয়ে পাঁচ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন । ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড আবেদনসহ পাঁচ আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ বলছে, ঘটনার দিন মো. মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি গ্লোরিয়া জিন্স কফি শপে নাস্তা করতে আসেন। আমিনুল ইসলাম তার গাড়ির চালক। আমিনুলের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ। ভ্যানচালক আব্দুর রহিম মিয়ার (৫০) গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর চকমানে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে আরিফকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভগ্নিপতি মনির হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদ গুলশান-১-এ ঘটনাস্থলের পাশের একটি কফির দোকানে আসেন। একপর্যায়ে তাদের দুজনকেও আটকাতে যান দোকানি হাবিবুর ও তার পরিচিত দোকানিরা। এসময় নিজের পিস্তল থেকে গুলি করেন আব্দুল ওয়াহিদ। এতে রাস্তার একজন পথচারী ও একজন রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ জানায়, পিস্তলটি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবদুল ওয়াহিদের নামে লাইসেন্স করা। তিনি ২০১৬ সালে এ অস্ত্রের লাইসেন্স পান।
বাবু/জেএম