মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
সোনাইমুড়ীতে প্রণয় কুমার ভার্মা
শান্তির বাণী ছড়াতে নোয়াখালীতে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:৩৫ PM আপডেট: ৩১.০১.২০২৩ ৪:২০ PM
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেছেন, শান্তির বাণী ছড়াতে নোয়াখালীতে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। তিনি অনেকগুলো গ্রামে ঘুরেছেন। সেখানে মানুষের মাঝে অহিংস নীতি প্রচার করেছেন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের আয়োজনে মহাত্মা গান্ধীর ৭৫তম মহাপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রণয় কুমার ভার্মা আরও বলেন, ‘হিন্দু মুসলমানের রক্ত এক ও অভিন্ন' এই বাণী তিনি প্রচার করেছেন। সারাবিশ্বে আজ অহিংস বাণী প্রচার হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বে শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় মহাত্মা গান্ধীর অহিংসনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

এর আগে সকালে আমন্ত্রিত অতিথিসহ গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গান্ধী স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ, প্রদীপ প্রজ্বালন এবং সর্ব ধর্মীয় প্রার্থনা করা হয়। ধর্মীয় প্রার্থনা শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের শিল্পীবৃন্দ।

গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রাহা নব কুমারের সঞ্চালনায় ও ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি (অব.) এ.এইচ.এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, নোয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এইচ.এম. ইব্রাহিম, জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার  মো. শহীদুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ শাসনামলের শেষের দিকে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানের মতো নোয়াখালীতেও হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেই দুঃসময়ে শান্তি মিশন নিয়ে নোয়াখালী ছুটে আসেন মহাত্মা গান্ধী। ১৯৪৬ সালের ৭ নভেম্বর থেকে ১৯৪৭ সালের ২ মার্চ পর্যন্ত নোয়াখালী অবস্থানকালে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, হিন্দু-মুসলিম ভ্রাতৃত্ব স্থাপনসহ সেবামূলক বিভিন্ন কাজে হাত দেন। এভাবে ১৯৪৭ সালের সালের ২৯ জানুয়ারি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ গ্রামে গান্ধীর আগমন ঘটে। 

জয়াগের তৎকালীন জমিদার ব্যারিস্টার হেমন্ত কুমার ঘোষ নিজ জমিদারির সব সম্পত্তি মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের জন্য গান্ধীকে দিয়ে দেন। এরপর জমিদার বাড়িতে গড়ে ওঠে গান্ধী শান্তি ক্যাম্প। বাড়ির পাশে একটি কারিগরি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন গান্ধী। যা পরে গান্ধী মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউট ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে জাতীয়করণ করা হয়। যেখানে কর্মমুখী শিক্ষার পাশাপাশি গান্ধীর সাতটি অহিংস নীতি- নীতিহীন রাজনীতি, নৈতিকতাহীন বাণিজ্য,পরিশ্রমহীন সম্পদ, চরিত্রহীন শিক্ষা, মানবতাহীন বিজ্ঞান, বিবেকবর্জিত আনন্দ ও ত্যাগহীন অর্চনা জীবন দর্শন সম্পর্কে আগামী প্রজন্মকে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তারাও জানতে পারছে মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে।

১৯৭৫ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে  ‘গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট’ অর্ডিন্যান্স গঠনের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে গান্ধীর জীবন দর্শন ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ও বিভিন্ন সেবামূলক কাজ শুরু করা হয়। 

বাবু/এসআর

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  বাণী   মহাত্মা গান্ধী   আশ্রম   







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত