দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় সোমবারের বিধ্বংসী ভূমিকম্পে এখনো পর্যন্ত ২১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হয়েছে।ভূমিকম্প আঘাত হানার পর চার দিন অতিবাহিত হয়েছে। ফলে ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে। নিহতের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তারা আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এরই মধ্যে কিছু অলৌকিক ঘটনাও ঘটছে। ভূমিকম্পের চার দিন পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে ১০ দিন বয়সী একটি শিশু এবং তার মাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, উদ্ধারকারীরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে শিশুটিকে থার্মাল কম্বলে ঢেকে বের করে আনছেন। উত্তর সিরিয়ায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকজন সাহায্যের জন্য ডাকাডাকি করছেন কিন্তু তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার মতো প্রায় কেউ নেই।
ইস্তাম্বুলের একজন তুর্কি সাংবাদিক ইব্রাহিম হাসকোলোলু বলেছেন, ‘লোকেরা এখনো [ধসে পড়া] ভবনের নিচে রয়েছে, তাদের সাহায্যের প্রয়োজন।’
তিনি বিবিসিকে বলেছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আটকে পড়া লোকজন তাকে এবং অন্যান্য সাংবাদিকদের ভিডিও, ভয়েস নোট এবং তাদের লাইভ অবস্থান পাঠাচ্ছে। তারা আমাদের বলছে যে তারা কোথায় আছে এবং ‘আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না।’ হাসকোলোলু বলেছেন, তুরস্কের জন্য এখন প্রয়োজন সব আন্তর্জাতিক সহায়তা।
বিধ্বস্ত শহরগুলোতে বহু মানুষ এখনো আশ্রয়হীন। তাদের কাছে নিরাপদ খাবার পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, এই পরিস্থিতিতে ভূমিকম্পের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আরও অনেক মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ডব্লিউএইচও অনুমান করছে, তুরস্ক এবং সিরিয়াজুড়ে আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ এই ভূমিকম্পের শিকার হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তার জন্য জাতিসংঘের ছয়টি লরি সাহায্য নিয়ে এই প্রথমবারের মতো তুরস্ক থেকে সিরিয়া ঢুকেছে। এই প্রথম সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাহায্য গেল।
দুটি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচাতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
সোমবার ভোররাতে গাজিয়ানটেপের কাছে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় প্রায় বেলা দেড়টার দিকে আরও একটি ৭.৫-মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কর্মকর্তারা বলেছেন যে এটি ‘আফটারশক’ ছিল না।

তুর্কি দুর্যোগ সংস্থা জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পটিতেই তুরস্কে ৩ হাজার ৪১৯ জনেরও বেশি মারা গেছে এবং আহত হয়েছে আরও ১৫ হাজার মানুষ। অন্যদিকে সিরিয়ায় ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে। সোমবার পর পর দুটি ভূমিকম্পের পর তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে পর পর কয়েকটি শক্তিশালী আফটারশক ও কম্পন আঘাত হেনেছে।
খবর বিবিসি
-বাবু/এ.এস