রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে পুস্পার্ঘ অর্পণ ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে পালিত হয়েছে ৪০তম স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহী কলেজে দিবসটি পালন করা হয়।
১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রি ‘মজিদ খানের শিক্ষানীতি প্রত্যাহার, বন্দি মুক্তি ও জনগণের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে সারাদেশে ‘ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই দিন পুলিশের গুলিতে জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, দিপালীসহ সারাদেশে ১১ ছাত্র প্রাণ হারায়।
কর্মসূচির শুরুতে শহীদ জাফর, জয়নাল, দীপালি সাহা, কাঞ্জন, মোজাম্মেল আইয়ুবসহ সেদিনের সকল শহীদদের প্রতি পুস্পার্ঘ অর্পণ ও তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিরবতা পালন করা হয়। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন মহানগর ছাত্র মৈত্রীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক তামিম শিরাজী।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, সাবেক ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ নেতা কামরান হাফিজ,পলিটেকনিক ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস মেরাজুল আলম, সাবেক ছাত্রনেতা শাহরিয়ার রহমান সন্দেশ, সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুল করিম কাজল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী মহানগর সাবেক মহানগর সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক, সাবেক ছাত্রমৈত্রী নেতা ইখতিয়ার প্রামাণিক, শহীদ জয়নালের ভাতিজা রাইসুল ইসলাম জুবায়ের, সাবেক ছাত্রনেতা সৈয়দ জোহের হোসেন রনি, রুবেল, মামুন, জয় প্রমুখ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক বলেন- ‘আমরা ভালোবাসা দিবসের বিরুদ্ধে নই, তবে শহীদ জাফর-জয়নালদের আত্মত্যাগ উপেক্ষা করে,গণতান্ত্রিক অগ্রধারায় তাদের মহান অবদান ভুলে গেলে হবে না। আজকের সকল ভালোবাসা শহীদ জাফর, জয়নাল,দীপালি, কাঞ্চনদের জন্য।
ছাত্রনেতা তামিম শিরাজী বলেন-” ৮৩‘র ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার লাল গোলাপ নয়, সেদিন ফুটেছিল ছাত্রদের বুকের রক্তে রঞ্জিত রাজপথের রক্তাত্ব গোলাপ। কর্পোরেট সংস্কৃতির প্রবল জোয়ারে সুপরিকল্পিত ভাবে তরুণদের তাদের গৌরবের ইতিহাস থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভালোবাসা দিবসের নামে চলছে অপসংস্কৃতি আর প্রবৃত্তি প্রদশর্নের নোংরা কালচার। স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের চেতনা আজ প্রায় হারিয়ে গিয়েছে বলা যায়।
স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাত্রনেতারা এবং রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রযন্ত্রের গুরুত্বপূর্ন পদে আসীন হয়েও স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবসের চেতনা এই প্রজন্মদের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যার্থ হয়েছে।
বাবু/জেএম