ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্ত্রী তালাক দেওয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামে শ্বশুর হাসমত শিকদারের বাড়িতে।
স্ত্রীর তালাকের ১ দিনের মাথায় মঙ্গলবার দুপুরে স্বামী শ্বশুরবাড়ি এসে বিষপান করে গুরুত্ব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে তার অবস্থা অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হলে বুধবার দুপুরে তিনি মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘারুয়া ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াছ মাতুব্বরের ছেলে নাজমুলের সঙ্গে বিগত ৪ বছর আগে চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী গ্রামের হাসমত সিকদারের মেয়ে কনিকার বিয়ে হয়। বিয়ের পর নাজমুল বেশ কয়েকটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী মনিকাসহ উভয় পরিবারের লোকজন তাকে বোঝানো সত্ত্বেও তিনি পরকীয়া থেকে ফিরে আসেননি।
একপর্যায় মনিকা গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্বামী নাজমুলকে লিখিতভাবে তালাক দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাজমুল বিষের বোতল হাতে নিয়ে শ্বশুরবাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বিষপান করেন। স্থানীয় জনতা তাকে দ্রুত ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে প্রেরণ করা হয়। সেখানে নাজমুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
স্ত্রী মনিকা জানান, আমার স্বামী নাজমুলের সঙ্গে গত ৪ বছর ধরে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে নাজমুল পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে ওই পথ থেকে ফেরাতে পারে নাই। বাধ্য হয়ে ২ দিন আগে আমি তাকে তালাক দেই। তালাকের খবর পেয়ে বাড়ির উঠানে এসে বিষপানে আত্মহত্যা করে।
এ ব্যাপারে নিহতের নাজমুলের পিতা ইলিয়াস জানান, নাজমুলের স্ত্রী মনিকাকে নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে একাধিক সালিশ বৈঠক হয়েছে। মনিকা ২ দিন আগে একতরফা তালাক দেয় নাজমুলকে। তালাকের সংবাদ শুনে মঙ্গলবার দুপুরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে বিষপান করে। বুধবার দুপুরে সে মারা গেছে।
চুমুরদী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসিম শিকদার মিলন জানান, নাজমুলের পরিবার ও মনিকার পরিবারকে নিয়ে একাধিকবার দরবার সালিশ করা হয়। নাজমুল সব সময় বেপরোয়া চলাচল করত।
ভাঙ্গা থানা ওসি জিয়ারুল ইসলাম জানান, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ সংবাদ পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। সেখান থেকে তার পরিবারের কাছে লাশ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাবু/এ আর