জুয়া খেলায় ঋণগ্রস্ত হয়ে প্রবাস ফেরত বাবার কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য নিজ ছেলে আফনান আল জামানকে (৭) অপহরণ করেছে বাবা ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় পুলিশ শিশুর বাবা ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার (০৮ মার্চ) দুপুরে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপহৃত শিশু আফনান আল জামান উপজেলার এমসি বাজার এলাকার (মাওনা সিএনজি পাম্পের) পেছনে বাবা-মার সাথে থাকে। মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) দিবাগত রাতে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কালির বাজার (মহুরিপাড়া) গ্রামের পলাতক আসামি রিপন মিয়ার বাড়ি থেকে শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
আসামি (শিশুর বাবা কামরুজ্জামান) (২৮), নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন সম্রাট(৩৮) এবং ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কালির বাজার (মহুরিপাড়া) গ্রামের রিপন মিয়া (২৮)। তাদের মধ্যে বাবা কামরুজ্জামান ও সম্রাটকে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা মুলাইদ (এমসি) বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। অপর আসামি রিপন পলাতক রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদিকুর রহমান জানান, সোমবার (০৬ মার্চ) দুপুরে ভিকটিমের বাড়ির সামনে থেকে শিশু আফনান আল জামানকে নিয়ে যায় তার বাবা। শিশুর বাবা একজন জুয়াড়ি ও মাদকসেবী। সম্প্রতি জুয়া খেলে সে ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত হয়। ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য সহযোগী পলাতক আসামি রিপনের পরামর্শে তার শিশু ছেলেকে অপহরণ করে। পরে তারা শিশুর মা’র মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে।
এ ঘটনায় শিশুর মা সামিরা জাহান পপি শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেলে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শিশুর বাবা আসামি কামরুজ্জামান ও আনোয়ার হোসেন সম্রাটকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুর বাবা জানায় বন্ধু রিপনের পরামর্শে সে তার ছেলেকে জুসের সাথে ঘুমের ঔষধ দিয়ে আসামি রিপনের মার কাছে রেখে আসে। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) দিবাগত রাতে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কালির বাজার (মহুরিপাড়া) গ্রামের পলাতক আসামি রিপন মিয়ার বাড়ি থেকে শিশুকে উদ্ধার করে।
তিনি আরো জানান, শিশুর দাদা সম্প্রতি প্রবাস থেকে দেশে আসছেন। সে তার নাতি আফনান আল জামানকে অনেক ভালোবাসেন। অপহরণকারীদের ধারণা ছিল তার নাতিকে অপহরণ করলে মুক্তিপণ হিসেবে তার দাদার কাছ থেকে টাকা আদায় করে ঋণ পরিশোধ করবেন। গ্রেফতার আসামিদেরকে বুধবার (০৮ মার্চ) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পলাতক অপর আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাবু/জেএম