বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫ ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫
ফ্রান্সে নিরাপত্তা বাহিনী-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০২৩, ১২:৩২ PM
ফ্রান্সে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে এ সংঘর্ষ হয়। ফ্রান্স সরকারের প্রস্তাবিত অবসর নীতিমালার বিরুদ্ধে তিন মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে এটিকে সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে এএফপি

গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার পরিকল্পনা হয় এবং পার্লামেন্টে কোনো ধরনের ভোটাভুটি ছাড়াই এ সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদে তিন মাস ধরে ফ্রান্সের রাস্তায় বিক্ষোভ চলছে।  বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ বড় ধরনের সহিংসতায় রূপ নেয়।

এদিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ১৫০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। দেশজুড়ে বেশ কয়েক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অগ্নিসংযোগ করেছেন। এদিন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছেন এবং লাঠিপেটা করেছেন।

দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় বর্দো শহরের পৌর ভবনের বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আগামী মঙ্গলবার ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সেখানে সফরে যাওয়ার কথা। এটি ব্রিটিশ রাজা হিসেবে চার্লসের প্রথম বিদেশ সফর। তবে বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার নতুন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করায় রাজা চার্লসের সফরের ওপর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করেছেন।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন বলেছেন, ফ্রান্সজুড়ে বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১৪৯ সদস্য আহত হয়েছেন। কমপক্ষে ১৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু প্যারিস থেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন ৭২ জন। ডারমানিন আরও বলেন, প্যারিসে প্রায় ১৪০টি জায়গায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ১০ লাখ ৮৯ হাজারের মতো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। শুধু প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার মানুষ। গত জানুয়ারিতে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এটি ছিল রাজধানী শহরটিতে সবচেয়ে বড় জমায়েত। তবে দেশজুড়ে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছিলেন ৭ মার্চের বিক্ষোভে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ওই দিন বিভিন্ন জায়গায় মোট ১২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন।

নিজস্ব সাংবাদিকদের বরাতে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্যারিসে কয়েক শ কালো পোশাকধারী উগ্রপন্থী বিক্ষোভকারী ব্যাংক, দোকান ও ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁর জানালা ভেঙে ফেলেছেন এবং সড়কে থাকা বিভিন্ন সরঞ্জাম নষ্ট করেছেন।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিলে শহরের স্থানীয় পুলিশপ্রধান থিয়েরি কোর্তেকুইসে বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে সামান্য আহত হয়েছেন।

বিক্ষোভকারীরা প্যারিসের গ্যারে দে লিয়ন স্টেশনের রেলপথ দখল করে রেখেছিলেন। চার্লস দ্য গল বিমানবন্দরে চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

গত বুধবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ অবসরকালীন সংস্কারকে জরুরি বলে উল্লেখ করার পর বিক্ষোভকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এদিন মাখোঁ বলেছেন, এ সংস্কার করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা কমে গেলেও তিনি তা মেনে নিতে প্রস্তুত আছেন। এর আগে গত রোববার এক জরিপে দেখা গেছে, মাখোঁর জনপ্রিয়তা ২৮ শতাংশে নেমে এসেছে।

-বাবু/এনএইচ

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  ফ্রান্স   সংঘর্ষ   সদস্য  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত