দলের নীতি নির্ধারকরা যদি মনোনয়ন দেন তবে অবশ্যই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবেন শিল্পপতি খসরু চৌধুরী। আ.লীগের হয়ে লড়বো, তবে দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষ হয়েই কাজ করবো। সার্বিক বিষয়ে এলাকার উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই নির্বাচন করতে চান।
জনগনের জন্য কতটুকু করতে পেরেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, জানি না কতটুকু করতে পেরেছি তবে গরীব দায়গ্রস্ত কণ্যাদের বিয়ের ব্যবস্থা, মসজিদ-মাদরাসার উন্নয়ন, কেসি হাসপাতালের মাধ্যমে যতটুকু পারি অসহায়দের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুযোগ ও অসুস্থ রোগীর বিনামল্যে চিকিৎসা ওষুধ প্রদান করে থাকি। যোগ্যতা, ক্ষমতা অনুযায়ী বলতে পারি শতভাগ কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান সরকার জনগনের আশানুরুপ হয়ত সব এলাকাতে শতভাগ কাজ করতে পারে নি। তবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি করেছে বলে মনে করি। প্রধানমন্ত্রী তার জীবদ্দশা যতটুকু দেখেছি তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। বাংলাদেশের প্রতিটি ভূমিহীন গৃহহীন ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে জমিসহ পাকা ঘর করে দিয়েছেন। স্বপ্নের পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, কর্নফুলী টানেল, পাতালরেল যত উন্নয়নের কথা বলবেন তার হাত দিয়েই হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমাদের উন্নয়নের দেশ অর্থাৎ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উন্নীত করেছেন। পাসপোর্ট ও ডিজিটাল এনআইডির মাধ্যমে বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য অবস্থানে এনেছেন যেটা বাংলাদেশের জাতি হিসেবে গৌরবের। নির্বাচনে অংশ নিলে জনগনের পক্ষে কতটুকু সাড়া পাবেন এ প্রসঙ্গে বলেন যারা প্রার্থী হিসেবে থাকবেন তাদের চেয়ে অনেক বেশি সমর্থন পাব বলে মনে করি। গত ২৪ বছর ধরে নিজস্ব অর্থায়নে এলাকার উন্নয়ণে কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকা ১৮ আসনে ৫০-৬০ ভাগ মসজিদে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছি। এছাড়াও ৫০ ভাগের অধিক মাদরাসার উন্নয়ণে অব্যাহতভাবে অর্থ সহায়তা দিয়ে আসছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তিন ভাগ গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের ফ্রি পড়াশুনার ব্যবস্থা করেছি। অলাভজনক চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য নিয়মিত ৩০-৩৫ পার্সেন্ট পর্যন্ত ছাড়ে সেবাসহ ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে থাকি। এতে প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা আমাদের নিপা গ্রুপ থেকে ভর্তুকি দিচ্ছি।
বিভিন্ন স্কুলের চার শতাধিক গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের কাগজ-কলম বেতন দিয়ে সাহায্য করেছি। কেসি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্পোর্টিং ক্লাব ও খেলাধুলার মাধ্যমে যুবকদের রেখে দিয়েছি যাতে তারা মাদক বা নেশার প্রতি আকৃষ্ট না হয়। ১৬ হাজারের মত সদস্য নিয়ে সিনিয়র সিটিজেন প্রতিষ্ঠান আছে। যেখানে বিনামূল্যে তাদের শারীরিক চর্চা করানো হয়, ড্রেস প্রদান করা হয়। এছাড়াও কেসি ফাউন্ডেশনে সদস্য রয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার। খসরু চৌধুরী দেশের পোশাক শিল্প খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম একজন। পোশাক খাতের পাশাপাশি একজন মানব হিতোষী হিসেবেও তার সুনাম রয়েছে বেশ। তাছাড়া রাজনীতিতে তার রয়েছে অবাধ বিচরণ। বঙ্গবন্ধুর আর্দশকে যিনি লালন করেছেন ছাত্রজীবন থেকেই। সেই আর্দশিক দলের তিনি এখন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ঢাকা মহানগর উত্তর আ.লীগের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে নিজের অবস্থান পোক্ত করেছেন। সামনে আরো অনেকদূর যেতে চান। দলের হয়ে কাজ করতে চান, কাজ করতে চান সাধারণ মানুষের জন্যে যে লক্ষে তিনি আসছে জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা আঠার আসনের এলাকার উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গিকার নিয়েই অংশ নিতে চান। তবে সে ক্ষেত্রে দলের স্বিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার কথা জানালেন এ মানবিক ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি খসরু চৌধুরী।
পোশাক খাতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান নিপা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। ২০২০ সালের সংসদ উপ-নির্বাচনে তিনি এ আসনে শক্তিশালী মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। সামনের নির্বাচনেও দলের কাছে এ সুযোগ চাইবেন তিনি। করোনাসহ বিভিন্ন সামাজিকতায় সাধারণ গরীব মেহনতি মানুষের পাশে থাকায় এ আসনে এলাকায় তার ভালো ইমেজ তৈরি হয়েছে। তাছাড়া তার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলায় সাধারণ উপকার ভোগীর সংখ্যাও প্রায় ৫০ হাজার। বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের বাসিন্দা আ.লীগের এ নেতা এখন উত্তরার স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। ১৯৮৯-৯৩ পর্যন্ত শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে কাজ করেন। ৯০ এর শৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, ২০০৫ সালে ততত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হিসেবে রাজপথে সক্রিয় ছিলেন। বিএসসি শেষে বিদেশে পোশাক শিল্পে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে ১৯৯৫ সালে জড়িয়ে পড়েন তৈরি পোশাক ব্যবসায়। কঠোর পরিশ্রম ও শ্রমিক বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে জায়গা করে নেন পোশাক মালিকদের বৃহৎ সংগঠন বিজিএমইএ। বর্তমানে তিনি সংগঠনটির একজন প্রভাবশালী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাবু/জেএম