গরু, ছাগলের মাংসের সাথে দেশী ও সোনালী মুরগীর মাংস খাওয়া বাদ দিয়েছি অনেক আগেই। ব্রয়লার মুরগী ছিল আমাদের গরীবের ভরসা। ১৩০ হতে ১৪০টাকা কেজি দরে আগে ব্রয়লার মুরগীর মাংস কিনতাম। সরকার রমজান উপলক্ষে ১৯৫টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগীর দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় কিছুটা খুশি হয়েছিলাম। মনে করেছিলাম সন্তানদের ব্রয়লারের মাংস হলেও সেহরিতে খাওয়াতে পারবো।
তবে বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। বাজারে ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৫০টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগী এখন আর আমাদের মতো গরিব মানুষের খাওয়ার মাংস নয়। আক্ষেপ ও ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভ্যান চালক জহুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সার্মথ্য না থাকায় ছোট ছোট রিটা মাছ কিনে সেহরি করেছি। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একশত টাকার ভাড়াও মারতে পারি নাই। ইফতারের খাবারের টাকাও উপার্জন হয় নাই।
পবিত্র রমজান মাসে কাঁচা বাজারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জিনিস পত্রের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগী ২৫০টাকা কেজি, দেশি মুরগী ৬০০টাকা, সোনালী মুরগী ৩৫০টাকা, গরুর মাংস ৬৫০টাকা ও ছাগলের মাংস ৯০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০টাকা হালি।
পবিত্র রমজান মাসে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের উপার্জন কমে যাওয়ায় সেহরি ও ইফতার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে তারা।
দিনমজুর আমিনার রহমান বলেন, রমজান মাস আসলেই আমাদের দেশে জিনিস পত্রের দাম বেড়ে যায়। দিনে তিন হতে চারশত টাকা আয় হয়। এই টাকা দিয়ে কোন রকম চাল, ডাল, আলু কেনা যায়। মাংস কেনার কথা কল্পনাতেও ভাবতে পারি না।
মুরগী বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ২২৩টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগী কিনে ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারী বেশি দাম কিনলে, আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আরেক মুরগী বিক্রেতা মাইকেল ইসলাম বলেন, কোম্পানি হতে চারহাত বদলের পর আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা মুরগী পাই। তাই আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়।
এ বিষয়ে ডোমার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি জানান, প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং চলছে। কেউ বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় তাদের আনা হবে।
বাবু/এনএইচ