র্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের (৩৮) ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ।
রোববার (২ এপ্রিল) বিকেলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের (রামেক) ফরেনসিক বিভাগ থেকে প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তবে ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে জেসমিনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কী উঠে এসেছে তা নিয়ে কেউ কথা বলছেন না। আদালতে প্রতিবেদন পৌঁছানোর আগে ‘স্পর্শকাতর’ এই বিষয় নিয়ে কেউ কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন।
এর আগে, জেসমিনের মৃত্যুর পর ২৫ মার্চ রামেকের মর্গে তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড মরদেহের ময়না তদন্ত করে। এই বোর্ডের প্রধান ছিলেন রামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন। রোববার রাতে তিনি বলেন, ‘ময়না তদন্ত প্রতিবেদন আজ অফিস সময়ের মধ্যেই পুলিশকে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুর কারণ কী এসেছে সেটা আমি গণমাধ্যমকে বলতে পারব না।’
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে শুনলাম যে রিপোর্ট এসেছে। কী রিপোর্ট এসেছে সেটা আমি জিজ্ঞেস করিনি। রিপোর্ট কোর্টে গেলে সবাই জানতে পারবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুভাষ চন্দ্র বর্মন প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার কথা-ই অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি রিপোর্ট পাইনি। কিছু বলতে পারব না।’ এ বিষয়ে তিনি রাজশাহী নগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র রফিকুল আলমের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। এরপর ফোন করা হলে রফিকুল আলম ধরেননি।
উল্লেখ্য, র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকালে নওগাঁ থেকে জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র্যাব এ অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্ন জনকে। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
আটকের পর ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহীতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। জেসমিনের মৃত্যুর পরদিন ২৫ মার্চ রামেকের মর্গে মরদেহের ময়না তদন্ত করা হয়। এরপর কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জেসমিনের মরদেহ গোসল করানো হয় রাজশাহীতেই। পরে কাফন পরানো মরদেহ কফিনে করে নওগাঁয় নিয়ে যায় র্যাব। সেখানে র্যাবের উপস্থিতিতেই মরদেহ দাফন করেন স্বজনেরা।
স্বজনদের অভিযোগ, আটকের পর নির্যাতনের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বাবু/মম