ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের দুবলা গ্রামের জসিম মিয়া খোলা জায়গায় স্থাপন করেছেন একটি ঘানি। এটি ঘুরছে ঘোড়ার সাহায্যে। ঘানি ঘুরার সঙ্গে তাল রেখে ফোঁটায় ফোঁটায় চুইয়ে পড়ছে তেল। সারাদিন ঘানি টেনে ৫-৬ লিটার তেল তৈরি করা যায়। প্রতিদিন সেই তেল ও খৈল বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে চলে তাদের পাঁচ জনের সংসার।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে আখাউড়া-সুলতানপুর সড়কের দুবলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিশেষভাবে স্থাপিত কাঠের তৈরি গামলা জাতীয় পাত্রে প্রথমে সরিষা রাখেন। এরপর জোয়ালের একপাশে বড় পাথর অন্যপাশ ঘোড়ার গলায় বেঁধে চক্রাকারে ঘুরানো হয়। ক্রমাগত ঘূর্ণনে গামলা জাতীয় পাত্রে রাখা সরিষা পিষে ফোঁটায় ফোঁটায় তেল বের হয়। এ কাজে কখনো কখনো ঘোড়ার সঙ্গে নিজেও ঘুরেন। আবার অনেক সময় চোখ বাঁধা অবস্থায় ঘোড়া একাই ঘুরতে থাকে। চোখ বাঁধার কারণ জানতে চাইলে জসিম মিয়া জানান, সব সময় বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকে। চোখ বাঁধা না থাকলে অনেক সময় থমকে দাঁড়ায়। চোখ বাঁধা থাকলে কেউ তার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটছে বা সোজা-সোজি হাঁটছে মনে করে ঘুরতে থাকে।
ঘানি টানার কাজ অত্যন্ত পরিশ্রমের কাজ উল্লেখ করে জসিম মিয়া আরও জানান, ঘোড়াকে ঘাস, ভুসি, কুঁড়া ইত্যাদি খেতে দিতে হয়। গত চার মাস আগে জেলার নাসিরনগর উপজেলা থেকে ৩২ হাজার টাকায় ঘোড়াটি ক্রয় করেন। এবং একই এলাকা থেকে গত দেড় মাস আগে ১৫ হাজার টাকা খরচ করে ঘানি ক্রয় করে নিয়ে আসেন। ১ মন সরিষা থেকে ১৩/১৪ কেজি তেল পাওয়া যায় এবং ২৫/২৬ কেজি খৈল পাওয়া যায়। প্রতি কেজি সরিষার তেল বিক্রি করেন ৪০০ টাকা আর ৭০ টাকা কেজি ধরে বিক্রয় করেন খৈল। জসিম মিয়া ১ মণ সরিষা ক্রয় করেন ৩ হাজার টাকায়। জসিম মিয়া তার পরিবারে মুখে অন্ন তুলে দিতে তিনি নিরন্তর পরিশ্রম করে চলেছেন।
মহা সড়কের পাশে খোলা জায়গায় ঘানিতে তেল ভাঙার এমন দৃশ্য দেখে পথচারীরা কৌতুহলী হয়ে দাঁড়িয়ে তেল ভাঙা দেখেন।
বাবু/জেএম