নগরীর কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাটের ইজারা নিয়ে চলছে বরিশাল জেলা পরিষদের নাটকীয়তা! বরিশাল জেলা পরিষদে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েও কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাটের ইজারা থেকে বঞ্চিত হলেন কামাল। আর এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন সর্বোচ্চ দরদাতা মোঃ কামাল।
কীভাবে অনিয়ম ও নিজেদের আখের গোছাতে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করছে বরিশাল জেলা পরিষদের কর্তাব্যক্তিরা? সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ১৯টি খেয়াঘাট ১ বছরের জন্য ইজারা প্রদানের লক্ষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখে দরপত্র আহবান করা হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ দুপুর ১টার মধ্যে দরপত্র জমা দেয়ার সময় নির্ধারিত হয়। এবং ওই দিনই বিকাল ৩টার সময় দরপত্র খোলা হয়। এ সময় বরিশালের কীর্তনখোলা নদীস্থ বেলতলা খেয়াঘাটের দরপত্রও খোলা হয়। এ সময় ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ডেকে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মো. কামাল নির্বাচিত হন আপরদিকে ৯৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ডেকেছেন হিরা মাতুব্বর।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী সর্বোচ্চ দরদাতাই প্রাপ্য হবে উক্ত ঘাটের এবং নিয়মানুযায়ী ১৪/১৫ দিনের মধ্যে সিএস হওয়ার কথা থাকলেও অধ্যবদি মো. কামালকে ডাকা হয়নি এবং সিএসও করা হয়নি। তবে দ্বিতীয় ডাক দাতা হিসেবে হিরা মাতুব্বর থাকলেও তাকে গোপনে খেয়া ঘাটের ডাক বুঝিয়ে দিয়ে জেমন বিধি ভেঙ্গেছে জেলা পরিষদ তেমনি পেশাদার পাটনি না হয়ে নিজেকে পাটনি দেখিয়ে ডাক নিয়ে জালিয়াতি করেছেন হিরা মাতুব্বর।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. কামাল আক্ষেপ করে জানান, সর্বোচ্চ দর ডেকেও আমাকে ঘাটের ইজারা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তিনি জানান, জেলা পরিষদের কিছু অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তাদেরই যোগসাজশে আমাকে ঘাটের ইজারা থেকে বঞ্চিত করে এই ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছে। আমি এ ঘটনায় উপরস্থ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল জেলা পরিষদের কিছু অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশে সর্বোচ্চ দরদাতা মো. কামালকে বেলতলা ঘাট বুঝিয়ে না দিয়ে দ্বিতীয় দরদাতা হিরা মাতুব্বরকে ঘাট বুজিয়ে দেয়ার পায়তারা করতে থাকেন। আর এমনটি হলে এদের দুর্নীতির কারণে সরকারও বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্ছিত হবে। এদিকে বিধি লঙ্ঘন করে কীর্তনখোলা (বেলতলা) খেয়াঘাটের ইজারা পাওয়ার বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করে হিরা মাতুব্বর বলেন, আমি বেলতলা ঘাটের ইজারা পাইছি। তবে এ বিষয়ে আমি কোনকিছু বলতে পারবো না। আপনাদের যা জানার জেলা পরিষদ অফিসে গিয়ে জানেন।
বরিশাল জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী শেখ মো. আমানুল্লাহর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ১৪/১৫ দিনের ভিতরে সিএস করার কথা। তবে কোটি টাকার উপরে যে ঘাট গুলো রয়েছে সেগুলো আগের থেকে ডাক কম দেয়ায় আবার ডাক দেয়া হয়েছে তাই সময় বেশি লাগছে। সর্বোচ্চ ডাক দাতা ইজারা পাবে এটাই নিয়ম। সেই নিয়ম অনুযায়ী ইজারা পাবে। তবে এ বিষয়ে, বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, এটা নিয়ে কোন প্রশ্ন কইরেন না। আমি এ বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পারবো না। তিনি আরও বলেন, সব বিষয়ে প্রশ্ন করা যায় না, আর সব বিষয়ে উত্তরও দেয়া যায় না। আমি সব বুঝেই কাজ করতেছি।
বাবু/জেএম