শনিবার ২৮ জুন ২০২৫ ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ২৮ জুন ২০২৫
তিস্তার চরাঞ্চলে ফসলের সমারোহ
অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভের আশা কৃষকদের
মো. লাজু মিয়া, আদিতমারী (লালমনিরহাট)
প্রকাশ: রবিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৩, ৪:২১ PM
প্রায় পানিশূন্য তিস্তার বুক চিরে জেগে ওঠা চরাঞ্চল গুলোতে এখন বাহারি ফসলের সমারোহ দৃশ্যমান। তিস্তার বিস্তীর্ণ চরজুড়ে কৃষকরা চাষ করেছেন ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ, চিনা বাদাম, শশা, করলা, গাঁজরসহ নানা জাতের ফসল।

চরের চাষাবাদকৃত এসব ফসলের ফলন ভালো হলেও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত থাকে কৃষক। তবে চরাঞ্চলে কৃষকের চাষকৃত ফসলের ন্যায্য মুল্য ও সংরক্ষণ ব্যবস্থাসহ চরে সৃষ্ট নানা সংকট নিরসনে কাজ করছে কৃষি বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থা। আর এতে ন্যায্য মুল্য পেলে চরাঞ্চলের কৃষকদের ঘরে ঘরে আসবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এমনটা আশা চরাঞ্চলের কৃষকদের।

কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী এ বছর তিস্তার বুক চিরে ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি চরে পরিণত হয়েছে। যার মধ্যে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে এবার চাষাবাদ হয়েছে নানা ধরনের ফসল। যা গত বছরের চেয়ে ৫শ হেক্টর বেশি।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, চরে চাষাবাদ কৃত জমির পরিমাণ বৃদ্ধির কারণ কৃষক সচেতনতা যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পাশাপাশি এবারে বাংলাদেশ সরকার ও সুইজারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত এমফোরসি নামের একটি প্রকল্পও চরবাসীর সচেতনতা বাড়ানোর কাজ করেছেন। ফলে ইতোমধ্যেই সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন চরাঞ্চলের মানুষ।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি হরিণের চর এলাকার হাদী মিয়া জানান, চরে তিনি ভালো বীজের ভুট্টা আর বাদাম লাগিয়েছেন। নিয়মিত সেচ ও সার প্রদানসহ পরিচর্যা অব্যাহত রাখলে ফলন ভালো পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা তার। জেলার কালীগঞ্জ শৈলমারী চরের কৃষক আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমরা চরের কৃষক। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ভালো বীজ ও সঠিক পরামর্শ প্রদানের লোক পেতাম না। তাই ফলনও আশানুরূপ হয়নি। এবছর এমফোরসির পরামর্শে ভালো বীজ, সার ও সঠিক পরিচর্যার পরামর্শ পেয়েছি। এবার ফসলের মাঠ দেখলেই মন জুড়িয়ে যায়। বাজারে মূল্য ভালো পেলে অধিক লাভবান হওয়ার আশা করেন তিনি। একই এলাকার বাসিন্দা বাবুল মিয়া বলেন, আমি বরাবরই ভুট্টা চাষ করি। তবে শহরে যাওয়ার রাস্তা ভালো না থাকায় ভালো সার, বীজ পাওয়া যেত না। এবছর অনেক নামকরা কোম্পানির লোকজন মাঠ পর্যায়ে এসেছে। সম্প্রতি এমপোরসির একজন টর্স সঠিক বাজারমূল্য কিভাবে পাবো সে পরামর্শ দিয়েছেন। ভালো দাম পেলে শুধু আমারই নয় এই এলাকার সকল কৃষক অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা পাবেন।

জানা গেছে, গত ২০২০ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ সরকার ও সুইজারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত এমফোরসি নামের একটি প্রকল্প লালমনিরহাটের সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধা উপজেলার চরবাসীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। চরাঞ্চলের মানুষদের প্রশিক্ষণ, বীজ, সার প্রয়োগে পরামর্শ, উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণ, নারীদের গরু ছাগল পালন প্রশিক্ষণসহ নানা কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। ইতোমধ্যে সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে চরাঞ্চলের ১৮ থেকে ২০ হাজার কৃষক।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হামিদুর রহমান জানান, জেলায় চর এলাকায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চরাঞ্চলের কৃষকদের পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। চরাঞ্চলের কৃষকদের সচেতনা বৃদ্ধির জন্য কৃষি বিভাগের পাশাপাশি এখন এখন অনেক সংস্থাও কাজ করছে।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  তিস্তা   চরাঞ্চল  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত