রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭ নং ইমাদপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর মোল্লাপাড়া আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসা গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত কৃষকের ঘরে পরিণত হয়েছে।
মাঠ এবং শ্রেণীকক্ষগুলো যেনো স্হানীয় চাষি,নববধূ আর কৃষকদের গৃহস্থালি কাজের ঘর। দেখলে বোঝার উপায় নেই এটি একটি এমপিও-ভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।স্হানীয়রা দীর্ঘদিন থেকেই এ ব্যাপারে অভিযোগ দিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার (২ মে ২০২৩) সরেজমিনে আনুমানিক ১২ টার সময় গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুর মোল্লাপাড়া আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ৫/৬ জন ছাত্রী ক্লাস করছে। শিক্ষকরা অফিস রুমে বসে অলস সময় পার করছেন। বাকি ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রী আর অবশিষ্ট শ্রেণিকক্ষ গুলো ফাঁকা পড়ে আছে। সংবাদকর্মীদের দেখে ছবি তুলতে নিষেধ করে ভারপ্রাপ্ত সুপার তার অফিস কক্ষে ডাকলেন। অফিসে ঢুকার পর অট্টহাসি দিয়ে বললেন,ভাই আমাদের গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসময় ধানকাটা এবং ধান মাড়াই চলছে, তাই ছাত্র ছাত্রী উপস্থিত হতে পারেনি। অন্যদিকে ১৬ জন দাখিল পরিক্ষা দিচ্ছে। তিনি জানান, আমরাও কৃষি কাজ করে তবেই প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নিতে আসি এবং ছুটি দিয়ে আবার গিয়ে কৃষি কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বো।

তাদের উপস্থিতিতে শ্রেণী কক্ষে ঢোকার অনুমতি নিয়ে মাঠে প্রবেশ করতেই দেখা গেলো কয়েকজন গৃহবধূ ধান এবং ধানের খড় শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠের উত্তর প্রান্তে খড়ের পালা এবং গরু বাঁধা আছে। কক্ষের ভিতরে ধানের বস্তা এবং ভূট্টার খড় রাখা হয়েছে। এমনকি কক্ষের ভিতরে ব্লাকবোর্ডে মাছ ধরার জাল শুকাতে দেয়া হয়েছে। গরুর গোবরের লাকড়িও শ্রেণিকক্ষে দেখতে পাওয়া যায়। সংবাদকর্মী দেখে পিয়ন তা অপসারণ করে বলছিলেন, এখানে এমনই ভাই। কেউ কারো দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করেনা।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ আমির হোসেন জানান, আমাদের ৬ তলা ভবন বরাদ্দ হয়েছে, তাই জায়গা সংকুলান হওয়ায় আমরা আপাতত এমনই চলছি। তিনি রাজনৈতিক পরিচয় ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের মাদ্রাসায় সামনে বছর আসলে চিনতে পারবেন না। কিন্তু মাদ্রাসায় গরু, গোবরের লাকড়ি, ধান,ভুট্টা, মাছ শিকার করার জাল এসব কেনো রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের গ্রাম। মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রী আড়াইশর বেশী বললেও তিনি ভর্তি রেজিষ্ট্রেশন বই দেখাতে পারেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ফরিদপুর মোল্লাপাড়া আমিনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নামে শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন। মাদ্রাসার উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ লাপাত্তা হওয়ার কথাও জানান তারা।
মিঠাপুকুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তারা খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
বাবু/মম