থাইল্যান্ডের জাতীয় সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দেশের ৯৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নির্বাচনে প্রায় পাঁচ কোটি ভোটার ভোট দিয়ে দেশটির সংসদের নিম্ন কক্ষের ৫০০ সদস্য নির্বাচিত করবেন। এ ছাড়া ২০ লাখ ভোটার এরই মধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন।
এই নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার (৩৬) ফেউ থাই পার্টি, সাবেক প্রযুক্তি ব্যবসায়ী পিটা লিমজারোয়েনরাতের (৪২) মুভ ফরোয়ার্ড এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সেনাপ্রধান প্রাউথ চান-ওচা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গণতন্ত্রপন্থি দুই বিরোধী দল দেশটিতে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মাঝে প্রচারণা চালিয়েছে। আজ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি অনলাইন এই খবর দিয়েছে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে ডজনখানেক সামরিক অভ্যুত্থানের সাক্ষী হওয়া দেশটিতে এই নির্বাচনকে রাজনৈতিক পথচলার বাঁক বদল হিসেবে দেখা হচ্ছে। জনমত জরিপে প্রাউতের চেয়ে পেতংতার্ন ও পিটা লিমজারোয়েনরাত এগিয়ে আছেন। তাই এই নির্বাচনে তিনি সামরিক শাসনবিরোধী এই দুই দলের কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, নির্বাচনে ফেউ থাই পার্টির নেতৃত্ব দেওয়া থাকসিনের মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বাবার রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এরই মধ্যে ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। টেলিকমিউনিকেশন খাতের কোটিপতি থাকসিন দেশটিতে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। তবে অভিজাত শ্রেণির কাছে তেমন জনপ্রিয় না। ২০০৬ সালে বিরোধীরা যখন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে, তখন সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন এবং ২০০৮ সালের পর থেকে তিনি লন্ডন ও দুবাইয়ে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।
অন্যদিকে, মুভ ফরোয়ার্ড দলের নেতৃত্ব দেওয়া ৪২ বছর বয়সী পিটা লিমজারোয়েনরাত অল্প সময়ের মধ্যে জনমত জরিপে এগিয়ে আসেন। দলটির প্রগতিশীল এবং উচ্চাভিলাষী তরুণ প্রার্থীরা সহজ কিন্তু শক্তিশালী বার্তা নিয়ে ভোটারদের মাঝে প্রচারণা চালায়। তাদের কথা, থাইল্যান্ডে পরিবর্তন দরকার।
এদিকে, জনমত জরিপে পিছিয়ে থাকা ৬৯ বছর বয়সী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রাউত ২০১৪ সালে মাসব্যাপী অস্থিরতার পর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে থাকসিনের বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রার কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেন। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য তিনিও মরিয়া হয়ে প্রচার চালিয়েছেন।
এর আগে ২০১৯ সালে থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে সে নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এতে ফল ঘোষণার এক সপ্তাহ পরে সেনাবাহিনীপন্থি একটি দল সরকার গঠন করে এবং প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে প্রাউতের নাম ঘোষণা করে। যদিও বিরোধীরা বলেছিল, এটা অনৈতিক।
বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |