২০১৪ সালে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত পুলিশ সদস্য ফরিদ উদ্দিন হত্যা মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. মনিরকে ৯ বছর পর গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব-৭ ।
সোমবার (১৫ মে) চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর এলাকা থেকে মনিরকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর সিনিঃ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার। গ্রেফতারকৃত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. মনির কুমিল্লার দেবীদ্বারের ফইয়াবাড়ীর মৃত আ. রশিদের ছেলে।
র্যাব-৭ এর সিনিঃ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বাংলাদেশ বুলেটিনকে জানান, আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর কনস্টেবল ফরিদ হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক ৩ আসামিকে গ্রেফতারের করতে আমরা ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়াতদন্ত শুরু করি। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পলাতক অন্যতম আসামি মো. মনিরকে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন নয়াবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারের পর সেখানে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে আটককৃত আসামি মনির এই হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং সেই মামলায় ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলে স্বীকার করে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন এলাকায় সরকারি দায়িত্ব পালন শেষে আগ্রাবাদ সিএন্ডবি কলোনি এলাকার নিজ বাসায় ফিরছিলেন কনস্টেবল ফরিদ উদ্দিন। এ সময় কতিপয় ছিনতাইকারীরা তার পথরোধ করে মালামাল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হন পুলিশ সদস্য ফরিদ। পরে গুরুত্বর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ সদস্য ফরিদকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ডবলমুরিং থানার তৎকালীন এসআই আমিনুল হক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ডাবলমুরিং থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করেন। মামলার চার্জশিট থেকে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য ফরিদ’কে ছুরিকাঘাতে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের পর মো. মনির তার অটোরিকশা করে খুনীদের নিরাপদে পালিয়ে যেতে সার্বিক সহায়তা করেছিলেন। ডবলমুরিং থানা পুলিশ হাতে সেই সময়ে আটক ৬ আসামির মধ্যে মো. নাছির ও মো. রাজিব নামে দুজন আসামি মামলা তদন্তের সময় মারা যান। পরবর্তীতে বাকি চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৫ সালের ১৭ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
চলতি বছর মে মাসের ৭ তারিখ বিজ্ঞ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে এবং ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযুক্ত পলাতক আসামি জসিম উদ্দিন রাজু, মো. মাবুদ দুলাল ও অজুন দে'কে যাবজ্জীবনের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। রায়ে অটোরকিকশা চালক মো. মনিরকে ১০ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
বাবু/জেএম