মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ইমরান হোসেন জিতুর জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জাহাংগীর আলম ও আসামির পক্ষে আব্দুন নূর দুলাল শুনানি করেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম জানান, দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম এসেছিল আসামি ইমরান হোসেন জিতুর। যিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাম থাকার তথ্য গোপন করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে জামিন নেন আসামি জিতু। বিষয়টি জানার পরদিনই তা আদালতের নজরে আনেন রাষ্ট্রপক্ষ। একইসঙ্গে জামিন সংক্রান্ত আদেশ প্রত্যাহার (রিকল) চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নেন।
জাহাংগীর আলম জানান, আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে আসামি কারামুক্তি পাচ্ছেন না। হাইকোর্টের জামিন আদেশের উপর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশই বহাল থাকছে।
গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে ঢাকার শাহজাহানপুরে আমতলা মসজিদ এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম। এ সময় ঘটনাস্থলে রিকশায় বসে থাকা কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় করা মামলায় ওই বছরের ১০ জুন দুবাই থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় সুমন সিকদার ওরফে মুসাকে। এই মুসার জবানবন্দিতে জিতুর নাম আসে। যেখানে বলা হয়, জিতুর দখলে থাকা একটি অস্ত্র এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হয়। অর্থাৎ হত্যাকাণ্ডে জিতুর সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা এই জবানবন্দিতে উঠে আসে।
এ মামলায় গত বছরের ১০ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করা পর্যন্ত জিতুকে জামিন দেন বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে দেন। একইসঙ্গে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়। সেই মোতাবেক আপিল বিভাগের দুই নম্বর বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি শুনানির জন্য আসে।
শুনানিতে আসামি জিতুর পক্ষ থেকে যে আবেদন দেওয়া হয় সেখানে এই মামলার অন্যতম আসামি শুটার মাসুম মো. আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দাখিল করা হয়। কিন্তু এই জবানবন্দিতে জিতুর নাম নেই। এরপরই চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ তুলে জিতুকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখে আপিল বিভাগ। এরপরই আসামি জিতুর নাম এই মামলার আরও দুই আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রয়েছে জানতে পেয়ে পরদিনই আপিল বিভাগের আদেশ প্রত্যাহারের (রিকল) আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রাখেন।
বাবু/মম