পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই শখ করে পালন শুরু করেন। এই শখে পালন করাই এখন বাণিজ্যিক রূপ ধারন করেছে। বর্তমানে তা আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। বলছিলাম পাখি খামারি মোস্তফা সোয়েব প্রয়াস কথা।
তিনি ২০১৯ সাল পুরো পৃথিবীজুড়ে করোনার থাবা, বিশ্ব যেন থমকে গিয়েছিলো এক জায়গায় একদম নিরবভাবে। সেই নিরব জায়গায় ঘরে অলস সময় কাটানোর জন্য ১ জোড়া দেশি এবং ১ জোড়া গিরিবাজ কবুতর পালন শুরু করেন। জানা যায় আগে কবুতর পালন হলে মাঝখানে ছিলো অনেক লম্বা একটা বিরতি, এই বিরতি ইতি টানা হয় করোনার সময়। তারপর থেকে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে কবুতর এর সংখ্যা এর কিছুদিন পর দেশি-গিরিবাজ এর পালন বাদ দিয়ে কবুতরের ফেন্সী পালন এর পর প্রথমে ক্যাপোচিন, চাইনিজ আউল, মুক্ষী কবুতর দিয়ে যাত্রা শুরু তারপর জার্মান শীল্ড, জ্যাকোবিন, হেলমেট, নান, রেন্ট, শো-কিং, তুরিবাজ, মশালদম, কালদম, নানা জাত এর কবুতর মিলিয়ে ১২০ জোড়া কবুতর দাঁড়ায়।
তিনি প্রতি বৃহস্পতিবার নিজের ছোট ভাইকে নিয়ে শ্রীমঙ্গল কবুতর এর খাবার আনতেন। একদিন দোকানদারের সাথে দাম কষাকষি নিয়ে ছোট একটি বাকবিণ্ডতা লেগে যায়। আর সেই দিন থেকে নিয়ত করে দুই ভাই শমশেরনগর বাজারে একটি দোকান দেন নাম দেওয়া হলো পপুলার বার্ড হাউজ এন্ড বীজঘর। কিন্তু দোকানে মাল উঠানোর মতোন টাকা ছিলো না। কী করবে দোকান নেওয়ার পরেও প্রায় ৭ দিন দোকান বন্ধ ছিলো দোকান এর ভিতর কোন মালামাল ছিলো না। কি আর করা যায় এরমধ্যে মোস্তফা শিহাব ছোট ভাইর তার ল্যাপটপ বিক্রি করে দিলো ১০ হাজার টাকা। ছোট ভাই এর ল্যাপটপ বিক্রির ১০ হাজার টাকায় দোকান এর র্যাক, ক্যাশ টেবিল-চেয়ার, পুরাতন কবুতর এর খাচা এবং বাজরীগার পাখি রাখার পুরাতন খাচা এবং ২৬৮৫ টাকার প্লাষ্টিক মাল তার পাশাপাশি দোকান এর এক কোনে একটি কার্টুনের উপর ৩ রকম এর ১৫ কেজি খাবার দিয়ে যাত্রা শুরু।
তারপর থেকে ব্যবসার যাত্রা শুরু। ধিরে ধিরে দোকান এবং গুদাম মিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ টাকার খাদ্য দোকানের অনান্য সরঞ্জাম মিলিয়ে প্রায় আরও ৭০-৮০ হাজার টাকার মালামাল রয়েছে। মোস্তফা সোহেব বলেন যেকোন কিছু শুরু করার যাত্রাটা অনেক কঠিন হয়ে থাকে আল্লাহর ওপর ভরসা করে আগাতে থাকলেই বাকি পথটুকু আল্লাহ'র রহমতে হয়ে যায়। ঠিক যেমনটা হয়েছিলো আমার সাথে, আলহামদুলিল্লাহ আমার আজকের এই অবস্থানের জন্য আমার মা-বাবার এবং আমার পরিবারের নিকটাত্মীয়রা অনেক সহযোগিতা করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর বাজারে, কিচির মিচির পাখির ডাক বিভিন্ন খাঁচায় পাতিলে বাসা করে পাখিগুলো পালন করছেন। পাখির খাঁচাগুলো সুন্দর ও পরিচ্ছন্নভাবে সাজানো। তার খামারে লাভবার্ড, কাকাতুয়া, ফিঞ্চ, দেশি-বিদেশি কবুতরসহ প্রজাতির অসংখ্য পাখি রয়েছে। কিছু উড়াউড়ি করছে, কিছু ঘর বানাচ্ছে। পাখির খামারের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের মাছও রয়েছে।
পাখি প্রেমিক মোস্তফা সোয়েব বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার পাখির প্রতি আলাদা টান ছিল। ভালোবাসা থেকেই শখের বশে পালন শুরু করি। তারপর অল্প পরিসরে খামার করা শুরু করি। শখে পালন এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
বাবু/জেএম