ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ইউপি সদস্যদের ছেলের থাপ্পড়ে মো. সোহেল মিয়া (১৭) নামে এক ইজিবাইক চালককে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় ইজিবাইক চালক ও এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় গত রোববার রাতে নিহতের বাবা আবু সাঈদ বাদী হয়ে সরিষা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল হাশেমের ছেলে ময়নাল হোসেন (২০)কে প্রধান আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় চার জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম মনি (৩০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করলেও প্রধান আসামি এখনো পলাতক।
সোমবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের মহেশপুর বাজারের ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ি সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার দুপুরে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের গুইলাকান্দা গ্রামের আবু সাঈদের ছেলে মো. সোহেল মিয়া তাঁর ইজিবাইক নিয়ে কৃষি বাজারের দিকে যাচ্ছিল। এসময় রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিল স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হাসেমের ছেলে ময়নাল হোসেন। সোহেল ওই স্থান পার হওয়ার সময় ইজিবাইকটি ময়নাল হোসেনের গায়ে সামান্য ঘষা লাগে। এতে ময়নাল ক্ষিপ্ত হয়ে সোহেলকে ইজিবাইক থেকে নামিয়ে নাকে-মুখে এবং কান বরাবর একটার পর একটা থাপ্পড় মারতে থাকে। এসময় ময়নালের কাছে বারবার ক্ষমা চেয়েও রেহায় পায়নি সোহেল। এক পর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় সোহেলকে উদ্ধার করে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই বাড়ি-ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যান ইউপি সদস্য আবুল হাসেম, তার ছেলে ময়নালসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন।
মানববন্ধনে ইজিবাইক চালক ও স্থানীয়রা জানান, ময়নাল ছেলেটা আগে থেকেই উচ্ছৃঙ্খল ছিল। বাবা জনপ্রতিনিধি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক প্রভাব খাটাতো সে। মানববন্ধনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান নিহতের পরিবার, ইজিবাইক চালক এবং স্থানীয়রাও।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, ' মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পরে গতকাল রাতেই অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে'।
বাবু/জেএম