বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫ ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ৯ জুলাই ২০২৫
পাটগ্রাম থানার কাউন্টার মামলা নীতি, অসহায় সুজন
রকিবুল ইসলাম রুবেল, লালমনিরহাট
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩, ৬:১৪ PM
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানা, যার অবস্থান জেলা শহর থেকে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দূরে। কি হচ্ছে সেই থানায়? মামলা ও মিথ্যা কাউন্টার মামলায় বাদীকে হেনস্তা করতে পাটগ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৬ মার্চ রাত প্রায় সারে দশটার দিকে পাটগ্রাম থানার অধিনস্ত রসুলগঞ্জ এলাকার সাদেকুল ইসলাম সুজনের ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী।

সেই হামলায় সাদেকুল ইসলাম সুজনের ডান হাত মারাত্মক জখম হয়ে ভেঙে যায় ও বাম হাতের তালুতে জখম হয় এবং মাজাতে রক্তাক্ত জঘম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন পাটগ্রাম হাসপাতালে ১৭ মার্চ রাত ১২টা ১৫ মিনিটে ভর্তি করে। যা হাসপাতালের রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ আছে, সকালে সাদেকুল ইসলাম সুজন ভাঙা হাতে ব্যান্ডেজ করে পাটগ্রাম থানায় ৬ জনকে আসামি করে একটি এজাহার দায়ের করেন।এই এজাহারে কম্পিউটার টাইপিং এ মারাত্মক একটি ভুল করে কম্পিউটার অপারেটর সেখানে ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয় ১৭ মার্চ রাত সারে দশটা কিন্তু হওয়ায় কথা ছিল ১৬ মার্চ আনুমানিক সারে দশটা। এই ভুল এজাহার নিয়েই পাটগ্রাম থানা ২০ মার্চ মামলাটি রেকর্ড করে যাহার নং ৫।

এই ভুলকে পুজিঁ করে পাটগ্রাম থানা পুলিশ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ১নং আসামি সাহাদাত হোসেনের বউ মিশু আক্তারের কাছ থেকে বাদীর বিরুদ্ধে ১৬ মার্চ রাত সারে দশটা সময় উল্লেখ করে বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট ও মেরে আহত করা হয়েছে মর্মে একটি এজাহার নেয়। সেই এজাহারটি ২৫ মার্চ রাতে পাটগ্রাম থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। যাহার নং ১০।

এই মামলার ২নং আসামি হলো মিন্টু মাহমুদ। তিনি আদিতমারীতে রুপালী ব্যাংকের সহকারী অফিসার পদে কর্মরত। ঘটনার দিন তিনি ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন ও সাকিল মিয়া ঢাকা মেট্রোরেলে কর্মরত ছিলেন।

সম্প্রতি দুইটি মামলারই চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এস আই সুমন। ১০ নং মামলার চার্জশিট পর্যালোচনা করে দেখা যায় ২ ও ৩নং আসামিকে মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। অথচ এই মামলাটি ছিল একটি সাজানো মিথ্যা মামলা। কারণ ডান হাত ভাঙা ও গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও সেই হাত দিয়ে কারো মাথায় আঘাত করা যায় না।

এই মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে পাটগ্রাম থানার এসআই রমজান আলীকে দোষী করে ১৫ মে এসপি অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী সাদেকুল ইসলাম সুজন।

রসুরগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী বাবু বলেন, আমার বোকা মনে প্রশ্ন হাত ভাঙা নিয়ে হাসপাতালের বেডে থেকে কেউ কি কারো বাড়িঘরে হামলা করতে পারে? এই মামলাটি অবশ্যই একটি মিথ্যা ঘটনার জন্ম দিয়েছে পাটগ্রাম থানা। থানা পুলিশের এমন আচরণে আমরা চিন্তিত না জানি আবার কোন অসহায় মানুষ মিথ্যা মামলার আসামি হয়।

সাদেকুল ইসলাম সুজন বলেন, আমাকে শেষ করে দিয়েছে পাটগ্রাম থানা। এর আগে আমাকে বিনা দোষে পাটগ্রাম থানায় নিয়ে সারাদিন লকাবে আটকিয়ে রাখা হয়ে ছিল। আমি এসপি অফিসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি যাতে এসপি স্যার এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিচার করেন।

পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক বলেন, সুজন ও তার ভাইদের সাথে জমি নিয়ে ঝামেলা। সে তার বাবার ওসিয়ত নামা মানে না। আর মামলাটির দুইটি আসামির নাম বাদ দিয়ে চার্জশীট দেয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাবু/জেএম 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত