সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার ১ বছর পর অবশেষ কেন্দ্র থেকে ঘোষিত হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আংশিক কমিটি। কমিটিতে মাহবুবুল হক সুমনকে সভাপতি এবং দিদারুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে বিভিন্ন পদে ৪০ জনের পদবি বণ্টন করা হয়। কমিটির পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ। এই কমিটি গঠন করতে দীর্ঘ প্রায় একযুগ লেগে গেছে। সর্বশেষ গত বছরের ৩০ মে চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এরপর একটি বছর পেরিয়ে গেলেও কমিটি ঘোষণা হয়নি।
অবশেষ মঙ্গলবার (১৩ জুন) বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আগামী তিন বছরের জন্য ১৩১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ৪০ জনের নাম ও পদবি ঘোষণা করেন। এই কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা মুঠোফোনে বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে শূন্যপদগুলো পূর্ণ করা হবে।
কমিটির সভাপতি পদ পাওয়া মাহবুবুল হক সুমন প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। একই সাথে সিটি কলেজ কেন্দ্রিক গ্রুপের খোরশেদ আলম সুজনের আস্থাভাজন। চট্টগ্রাম মহানগরীর পরীক্ষিত মেধাবী নেতা হিসেবে তিনি সুপরিচিত। চট্টগ্রামের রাজনীতিতে মাহবুবুল হক সুমন বরাবরই ক্লিন ইমেজের মানুষ। তিনি আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ হিসেবে চিহ্নিত। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের সন্তান। সর্বশেষ তিনি সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের বলয়ে যোগ দেন। রাজনৈতিক জীবনে এখন পর্যন্ত ক্লিন ইমেজ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। একাধিক কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছেন, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির ও প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর পছন্দের একাধিক পদ প্রার্থীর বিষয়ে কেন্দ্রের আপত্তি উঠে। মূলত সাংগঠনিক দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্কসহ বেশ কিছু বিষয়ে শীর্ষ পদ প্রত্যাশী কয়েকজনের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে সবুজ সংকেত মেলেনি। পরে উভয় পক্ষ থেকে বিকল্প নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়। শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রধান দুটি বলয়ের মাঝে অনেকটা ব্যালেন্স রেখেই কমিটি ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত কমিটিতে দুই একজন ছাড়া বেশির ভাগই রাজনীতিতে সক্রিয়৷ তবে বেশ কিছু জনপ্রিয় যুবনেতা পদ না পাওয়ায় তাদের পক্ষে অন্যরা আশাহত হলেও এখন পর্যন্ত পদ প্রাপ্ত কেউই নাখোঁশ হননি।
কমিটির নব নির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুল আলম সুমন বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, আওয়ামী যুবলীগ হচ্ছে আওয়ামী লীগের হৃৎস্পন্দন। বীর চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিটি পর্যায়ে যুবলীগকে সংগঠিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করাটাই আমার প্রথম লক্ষ্য। বিশেষ করে প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায় থেকে যুবলীগকে সুসংগঠিত করতে কেন্দ্রের দিকনির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করে যাবো। সহ সভাপতি সুরঞ্জিত বড়ুয়া লাভু বলেছেন, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ আগামী দিনে আরো শক্তিশালী অবস্থানে পৌছাবে। যুগ্ম সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, আমার দাদা জহুর আহমদ চৌধুরীর নীতি আদর্শ আমার শিরা উপশিরায় বসে চলছে এর সবটুকু জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য উৎসর্গ করতে কখনো পিছপা হবো না। সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়াউল আলম নোবেল বলেছেন, আমি রাজপথের আন্দোলন সংগ্রাম থেকে আজকের এই অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছি এর জন্য আমি আমাদের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম ভাইয়ার কাছে কৃতজ্ঞ। আগামী দিনে তাঁদের দিকনির্দেশনায় আমার নগর নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত করবো।
ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ছাড়া আরো যারা পদ পেয়েছেন তাদের মধ্যে সহ-সভাপতি করা হয়েছে ১১ জনকে। তারা হলেন, মো. নুরুল আনোয়ার, বেলায়েত হোসেন বেলাল, এড. আরশাদ আসাদ, আঞ্জুমান আরা, হেলাল উদ্দিন আহম্মদ, দেবাশীষ পাল দেবু, সুরঞ্জিত বড়ুয়া লাবু, আসহাব রসুল চৌং জাহেদ, মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌঃ,শাহজাদা মো. সাখাওয়াত হোসেন সাকু, মো. নুরুল আলম মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে চারজনকে। তারা হলেন, দিদারুল আলম দিদার, মো. সালাউদ্দিন, ইশতিয়াক আহমেদ চৌং, সাইফুদ্দিন আহমেদ।
সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে ৭ জনকে। তারা হলেন, সনত বড়ুয়া, মো. দিদার-উর -রাহমান তুষার, গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, ইঞ্জিঃ আবু মো. মহিউদ্দিন, এজেএম মহিউদ্দিন রনি, সুমন চৌঃ এবং মনোয়ার উল আলম চৌধুরী নোবেল। গ্রন্থনা- প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ ওমর ফারুক, অর্থ সম্পাদক মান্না বিশ্বাস, শিক্ষা, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. আক্তারুজামান রুমেল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক হাফেজ কে এম শহিদুল কাওসার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক হেলাল উদ্দিন আহমেদ, তথ্য-যোগাযোগ সম্পাদক প্রফেসর রেজাউল করিম, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক নইম উদ্দীন খান, ক্রীড়া সম্পাদক রাজীব হাসান রাজন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. আলমগির টিপু, উপস্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক- ভাঃ মো. শরিফুল ইসলাম আদনান, উপ ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাহজাহান আহমেদ সামি, সহ-সম্পাদক করা হয়েছে দুইজনকে। তারা হলেন, মো. ফেরদৌস আহমেদ, মো. ইব্রাহিম খলিল নিপু। সদস্য করা হয়েছে তিনজনকে। তারা হলেন, আলী ইকরামুল হক, মো. ওয়াসিম, খন্দকার মোক্তার আহমেদ আরিফ।
বাবু/জেএম