প্রতিদিন ময়লা পানি মাড়িয়ে স্কুলে যাওয়া–আসা করতে হয়। আমাদের কাপড় প্রতিদিন নষ্ট হয়। মাঠে পানি থাকায় টিফিনের সময় খেলা করতে পারি না। স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মাঠের দিকে তাকিয়ে কথা গুলি বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র কলেজ পাড়ায় অবস্থিত অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় স্কুল মাঠে। চারপাশে উঁচু হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সমস্যা আরও প্রকট হয়ে ওঠেছে। নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাবে বছরের ৬/৭ মাস এমন জলাবদ্ধতায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে নামতে পারছে না মাঠে। জলাবদ্ধতার কারণে শ্রেণিকক্ষে যাতায়াতের সময় কোমলমতি শিক্ষার্থীর অনেকেরই পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুততার সঙ্গে স্কুল মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর দাবি জানান, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল।
স্থানীয়রা জানায়, মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তব ভিত্তিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। জলাবদ্ধ মাঠের ঘাস ও আগাছার পঁচা দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া মাঠে জমে থাকা কাঁদা পানির কারণে শিক্ষার্থীরা শরীরচর্চা ও জাতীয় সংগীত গাইতে পারছে না।
বিদ্যালয়টি ২০১৭ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পিতা দেশবরেণ্য আইনজীবী প্রয়াত অ্যাড. সিরাজুল হকের নামে প্রতিষ্ঠা করেন আখাউড়া পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল। বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আখাউড়া পৌরসভা। তিন তলা বিশিষ্ট একটি ভবনে প্রায় সাড়ে ৫০০ শিক্ষার্থী আর ১৪ জন শিক্ষক নিয়ে চলছে পাঠদান।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আখাউড়া পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল মহোদয়কে মাঠের জলাবদ্ধতার বিষয়টি অবগত করেছি। মাঠটি সংস্কার করে দিবে বলে তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. শওকত আকবর খান বলেন, স্কুল মাঠে জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমি জেনেছি। স্কুলটি যেহেতু পৌর এলাকায় সে জন্য বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলব।
বাবু/জেএম