সোমবার ১১ আগস্ট ২০২৫ ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২
সোমবার ১১ আগস্ট ২০২৫
জরাজীর্ণ পশু হাসপাতাল, দীর্ঘদিন ধরে নেই চিকিৎসক
বি এ রায়হান, টঙ্গী
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩, ৫:৫৭ PM
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অঞ্চলের একমাত্র পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ও সিটি প্রাণিসম্পদ অফিস যা টঙ্গী পশু হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত। অযত্ন অবহেলা ও তদারকির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পরে আছে। এই হাসপাতালে দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ নেই কোন পশু চিকিৎসক। দুজন মাঠকর্মী, একজন অফিস সহায়ক ও একজন আয়া দিয়ে চলছে এই অফিসের সকল কার্যক্রম।  চিকিৎসক না থাকায় প্রায় ভোগান্তিতে পরছেন এই অঞ্চলে গড়ে ওঠা পোলট্রি, ডেইরি খামারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গবাদিপশু পালনকারীরা।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পাঞ্চল টঙ্গী। সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত হওয়ার পর টঙ্গী বর্তমানে সম্প্রসারিত আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। টঙ্গী ও আশপাশের এলাকায় রয়েছে অর্ধশতাধিক গ্রাম। যেখানে বিপুল সংখ্যক গবাদি পশু লালন-পালন করা হয়। সম্প্রতি এখানে গড়ে উঠেছে অনেক পোল্ট্রি ও ডেইরি ফার্ম। এ ছাড়া আবাসিক এলাকাগুলোতে অনেকেই হাঁস, মুরগি, কবুতর, খরগোশ, বিড়াল, কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণী পোষেন। কেউ আবার শখ করে বাড়ির ছাদে খামার করেছেন। তাই প্রায় সময় এসব প্রাণীর চিকিৎসা সেবা ও ঔষধপত্র প্রয়াজন হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না পাওয়ায় প্রায়ই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে পোষা প্রাণী।

জানা যায়, টঙ্গীর চেরাগআলী এলাকায় অবস্থিত এই হাসপাতালটি ১৯৮৪ সাল থেকে তৎকালীন টঙ্গী পৌরসভা দ্বারা পরিচালিত হতো। বর্তমানে এই হাসপাতালের অবস্থা খুবই শোচনীয় ভবনের অবস্থাও জরাজীর্ণ। দীর্ঘ দিন হাসপাতালের ভবন সংস্কার করা হয় না। চারপাশে নেই কোন সীমানা প্রাচীর, হাসপাতালের আসবাপত্র অনেক পুরোনো। এমনকি নেই কোনো চিকিৎসা সরঞ্জাম ও প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ। 

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে ভেটেরিনারি মেডিকেল অফিসার সোহরাব হোসেন অবসরে যান। পরে এ পদে আর কাউকেই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে মাঠকর্মীদেরই চিকিৎসকের কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। তাছাড়া বাজেটে পশু চিকিৎসা সেবার খাত না থাকায় এই হাসপাতাল থেকে কোনো ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয় না। সীমানা প্রাচীর ও গার্ড না থাকায় হাসপাতালের বেশ কিছু জমি ইতোমধ্যে বেদখল হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

হাসপাতালে পোষা প্রাণীর চিকিৎসা নিতে আসা লোকমান হোসেন জানান, একমাত্র মেয়ের আদরের বিড়াল গত কয়েকদিন যাবৎ অসুস্থ তাই এখানে নিয়ে আসলাম। কিন্তু এখানে কোন প্রশিক্ষিত ডাক্তার নেই। যারা সেবা দিচ্ছেন তারা মাঠকর্মী। নিরুপায় হয়ে তাদের উপর ভরসা রাখতে হয়। নামার বাজার বস্তির জাহাঙ্গীর জানান, কিছুদিন আগে ভুল চিকিৎসার কারণে আমার একটি ছাগল মারা যায়। তবুও গরু ছাগলের চিকিৎসার জন্য এখানে আসতে হয়।

মাঠকর্মী আব্দুল লতিফ বলেন, চিকিৎসক না হলেও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পশু চিকিৎসা করছি। পশুদের চিকিৎস ‘তো আর বন্ধ থাকতে পারে না। প্রতিদিন বহু অসুস্থ পশুপাখি নিয়ে আসে মানুষ সেগুলো ফিরিয়ে না দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম সফিউল আজম বলেন, সিটি করপোরেশনের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী হাসপাতালের নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। তখন এই পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। আপাতত চিকিৎসক না থাকায় মাঠকর্মীদের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত