সম্প্রতি বাজারে কাঁচামরিচের দাম নিয়ে রীতিমত সারাদেশে অনলাইন-অফলাইনে বা গণমাধ্যমে বিরাট আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। কাঁচামরিচের কেজি ১০০০ বা ১২০০ টাকাও উঠে গিয়েছিল বলে খবরে এসেছিল। একদম খবরটা শোড়গোল ফেলে দিয়েছে নেট জুড়ে। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামে মধ্যবিত্ত্বদের এমনিতেই নাভিশ্বাস। আয়ের সাথে ব্যয়ের হিসেব যেন সাধারণ মানুষজন মিলাতেই পাড়ছে না। তাতেই আবার দামের ঊর্ধ্বগতির তালিকায় নতুন করে যোগ হল কাঁচামরিচের দাম। ঢাকা সহ সারাদেশের বাজারে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম তিন গুণ ছাড়িয়েছে।
তবে ভুক্তভোগী ক্রেতাদের দাবি, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে সান্ত্বনা হিসেবে ক্রেতাদের ‘খোঁড়া’ যুক্তি দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এটা সব সময়ের পুরনো যুক্তি ‘যোগান কম, চাহিদা বেশি।’ পণ্যটির দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সরকার দ্রত সমস্যাটি নিরসনে ব্যবস্থাও নিয়েছেন।
নিত্য-পণ্যদ্রব্য মূল্য নিয়ে যে কত কাণ্ড চলছে তার উয়ত্তা নেই! যেমন-লবণ কাণ্ড, তেল কাণ্ড, গ্যাস কাণ্ড, পেয়াজ কাণ্ড, কাঁচামরিচ কাণ্ড ইত্যাদি। সামান্য কারণে কোনো একটা পণ্যের দাম একটু বাড়লেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নাস্তানাবুদ হয় সাধারণ জনগণ। মূল দামের সাথে কয়েকগুণ দাম যুক্ত হয়ে অত্যাচারের শিকার হয় ক্রেতারা। সরকারীভাবে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রুখতে যথেষ্ট ব্যবস্থাও নেওয়া হয় কিন্তু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের কারসাজি কমে না। পদে পদে ক্রেতাদের জিম্মি করে।
প্রাকৃতিক নানান দুর্যোগ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সামাল দিয়েই চলছে এদেশের অর্থনীতির চাকা। বিশ্বের মত আমরাও বিভিন্ন পদক্ষেপে যতদূর সম্ভব নিত্যপন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এদেশের উন্নয়নে বাধা হল দুর্নীতি ও অসাধু ব্যবসায়ীরা। ভোক্তারা অসাধু কালোবাজারী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে যেন জিম্মি হয়ে আছে। মধ্যবিত্তরা দৈনন্দিন জীবনযাপনে বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে গেলে প্রয়োজনের তুলনায় কম কেনাকাটা করে মাথায় হাত দিয়ে বাড়িতে ফিরতে হয় অনেকের।
ডিজিটাল থেকে এখন আমাদের টার্গেট স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। সবকিছুতে আমাদের এখন স্মার্ট ও আধুনিকায়ন দরকার। প্রতিটা বাজারে পণ্যের নির্ধারিত মূল্যের তালিকা পাবলিক প্লেসে টানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। মূল্য তালিকার বাইরে কোনো ক্রেতা দাম দিবে না আর যে ব্যবসায়ী তালিকার চেয়ে পণ্যমূল্য বেশি চাইবে তাকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম আরো বাড়াতে হবে। কোন দোকানদার বা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোন ক্রেতা প্রসাশনের নিকট অভিযোগ করলে তা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ভোক্তা অধিকার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে হবে। অসাধু ও কালোবাজারিদের রুখতে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে।
লেখক : আইনজীবী জজকোর্ট, খুলনা
বাবু/এ.এস