বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫ ৯ শ্রাবণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রাম নগরীজুড়ে মৃত্যুকূপ : নালা থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার
কামরুজ্জামান রনি, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩, ৭:১৬ PM আপডেট: ২৮.০৮.২০২৩ ৭:২৪ PM
চট্টগ্রাম নগরীতে খোলা নালায় পড়ে হতাহতের ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ খোলা নালায় পড়ে নিখোঁজের প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর মিলেছে শিশু ইয়াছিন আরাফাতের মরদেহ। চলতি আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) খোলা নালায় পড়ে এটি ২য় মৃত্যুর ঘটনা। এখন পর্যন্ত চসিকের বিপদজনক খোলা নালা ও অরক্ষিত খালে ডুবে মারা গেছে সাতটি তাজা প্রাণ। এছাড়া প্রায় প্রতিদিন নগরীর এসব মৃত্যুকুপে পড়ে একাধিক জন আহত হলেও দ্বায়িশীলদের টনক নড়ে না। 

সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে নগরীর হালিশহর রঙ্গিপাড়া এলাকার একটি নালা থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। শিশু ইয়াছিনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি বাংলাদেশ বুলেটিনকে নিশ্চিত করেছেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার কফিল উদ্দিন।  তিনি বলেন, ‘রোববার (২৭ আগস্ট) নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া শিশুটির মরদেহ পাওয়া গেছে। সকাল ৯ টার দিকে ঘরের সামনের নালা থেকে একটু দূরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও চসিকের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অভিযানে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।’

উল্লেখ্য, রোববার (২৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর আগ্রাবাদের রঙ্গিপাড়ার একটি খোলা নালায় পড়ে নিখোজ হয় দেড় বছর বয়সী শিশুটি। এর আগে ৭ আগস্ট সকালে দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইসলামিয়া হাট বাদামতল এলাকায় নালায় পড়ে নিপা পালিত (১৯) নামের হাটহাজারী সরকারি কলেজের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়।

মূলত বর্ষা মৌসুমে এসব প্রাণহানীর ঘটনা বেশী ঘটে। বৃষ্টির কারণে রাস্তা-ঘাট ও নালা-খাল ডুবে একাকার হয়ে গেলেই পথচারি থেকে আস্ত গাড়ি পর্যন্ত এসব নালা খালে পড়ে যায়।২০২১ সালের ২৫ আগস্ট সকালে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে পানির নিচে ডুবে থাকা রাস্তায় হাঁটার সময় ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ। কিছুদিন আগেই তার নিখোঁজের দুই বছরপূর্তি হলেও তার লাশের হদিস এখনো পাওয়া যায়নি। । এরপর ওই বছরই কয়েক মাসের ব্যবধানে একে একে খোলা নালায় আর খালে পড়ে প্রাণহানি ঘটে কলেজ ছাত্রী সাদিয়া, শিশু কামালের। এরপর আস্ত সিএনজি নিয়ে অরক্ষিত খালে পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়ে চালক সুলতান ও যাত্রী খাদিজা বেগমের। 
২০২১ সালে সালেহ আহমদের মৃত্যুর পর এ ঘটনায় দায় নিয়ে একে অন্যের দিকে অভিযোগ তুলেছিল দুই সরকারি সংস্থা চসিক ও সিডিএ। সেই সময় আলোচিত এই ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়। সাত সদস্যের ওই কমিটি ২০২১ সালের ১ নভেম্বর তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে কর্তৃপক্ষ হিসেবে সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশনকে দায়ী করা হয়। সেই প্রতিবেদন জমার পর সিডিএ ও চসিক নিজেদের দোষারোপ না করে সুর পাল্টে চসিক মেয়র রেজাউল করিম৷ অন্যদিকে সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ যে কোন ঘটনার পর একেবারেই নীরব থাকেন। বেশ কিছুদিন গণমাধ্যম কর্মীরা তাঁকে খুঁজেই পায়না। তারপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে নিতি নিজের পছন্দের তালিকার গণমাধ্যমদের ডেকে চসিকের ওপর দায় চাপিয়ে বক্তব্য দেন। এই দুই সংস্থার প্রধানদের কর্মকান্ডে চট্টগ্রামবাসি ভীষণ হতাশ। একের পর এক নানান ঘটনায় ফুঁসলে উঠছে নগরবাসী। এতে সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মক ভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে খোদ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন।  নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদেএ এক নেতা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উনাদের ওপর আস্থা রেখেছেন কিন্তু উনাদের কার্য্যকলাপের কারণে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত