আকাশ থেকে সাগরের বুক ছুঁয়ে নামবে বিমান। এমন দৃশ্য দেখতে যেমন উপভোগ্য ঠিক তেমনি রোমাঞ্চকরও বটে। দেশের ইতিহাসে এই এক চ্যালেঞ্জিং কাজের সুন্দর সমাপ্তি করতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। তার মাঝে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আগেই রিফুয়েলিং সিস্টেম চালু করে নতুন মাইল ফলক অর্জন করল কক্সবাজার বিমানবন্দর।
এর ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী ৪০-৪২টি ফ্লাইট তাদের জ্বালানি তেল কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকেই নিতে পারবে। দামও ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিলেট ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সমান।
বিমান সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, দুই কারণে এই রিফুয়েলিং সিস্টেম জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। একটি হচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কক্সবাজার বিমানবন্দরে কোনো উড়োজাহাজ জরুরি অবতরণ করতে গেলে তাকে জ্বালানি তেলপ্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হবে না। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত তেল নিয়ে উড়োজাহাজকে কক্সবাজার যেতে হবে না। এতে জ্বালানি তেল অনেক সাশ্রয় হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামীতে রিফুয়েলিংয়ের হাব হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে। গত রোববার (০৩ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে কক্সবাজার বিমানবন্দরে উদ্বোধন করা হয়েছে উড়োজাহাজে রিফুয়েলিং কার্যক্রম। একদিকে সাগর ছুঁয়ে দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে বাস্তবে রূপ পাচ্ছে, ঠিক তেমনি এগিয়ে চলছে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। যার কারণে এ বিমানবন্দরের ব্যস্ততা বেড়েছে বহুগুণে।
রিফুয়েলিংয়ের উদ্বোধনী দিন দেখা যায়, কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়েতে একের পর এক নামছে বিমান। কর্তৃপক্ষ বলছে, বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৮৭ ফ্লাইট থেকে শুরু করে বেসরকারি বিমান সংস্থার প্রতিদিন ৪০টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে।
গত রোববার পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে এক হাজার ২০০ লিটার জ্বালানি তেল সরবরাহের মাধ্যমে রিফুয়েলিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ।
বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ার অ্যাস্ট্রা’র কক্সবাজারের সহকারী স্টেশন ম্যানেজার শহিদুল আলম চৌধুরী বলেন, বিমানে ঢাকা থেকে অতিরিক্ত জ্বালানি নিলে অনেক সময় সেটা সমস্যা হয়ে যায়। কিন্তু এখন ঢাকা থেকে কম জ্বালানি নিয়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে রিফুয়েলিং করলে অনেক সুবিধা হবে। আবার অনেক সময় বৈরী আবহাওয়া থাকলে উড়োজাহাজে জ্বালানির সংকট হয়। তাই এখানে রিফুয়েলিংয়ে কার্যক্রম চালু হওয়ায় জ্বালানির সমস্যাটা দূর হবে।
বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলার কক্সবাজারের স্টেশন ইনচার্জ মুসা আহমেদ বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ রিফুয়েলিং কার্যক্রম চালু হওয়ায় সময় ও অর্থ দুটির অপচয় রোধ হবে। একই সঙ্গে যাত্রী সেবার মানও বাড়বে।
পদ্মা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, কক্সবাজার বিমানবন্দরে বর্তমানে ৩টি ট্যাংকে জ্বালানি তেলের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার লিটার। এটি আগামীতে পর্যায়ক্রমে ৩ থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত করা হবে।
বাবু/জেএম