রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫ ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাকলিয়া এক্সেস রোড
কয়েক মিনিটেই যাওয়া যাবে ঘণ্টার পথ
কামরুজ্জামান রনি, চট্টগ্রাম :
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৮:০১ PM
যে পথ পাড়ি দিতে ঘন্টা পেরিয়ে যেত, সেই দূরত্ব মাত্র কয়েক মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে। নগরীর নবাব সিরাজুদ্দৌলা রোডের চন্দনপুরা মসজিদ প্রান্ত থেকে ৩য় কর্ণফুলী সেতু সংযোগ সড়ক পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ (১৪৫৫ মিটার) সড়কটি নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ২২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট প্রস্থের চার লেনের বাকলিয়া এক্সেস রোড় প্রকল্পটি এখন উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, এই এক্সেস রোড় ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় দুই লক্ষ মানুষ নির্বিঘ্নে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার থেকে দ্রুততম সময়ে কোন ভোগান্তি ছাড়াই চট্টগ্রাম নগরীতে আসা-যাওয়ার করতে পারবে। বাকলিয়া এক্সেস রোডে সড়কের অবকাঠামোগত কাজ ইতিমধ্যে পুরোপুরি শেষ হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন না হলেও ইতিমধ্যে সড়কটি দিয়ে ছোট যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। শীঘ্রই এটি উদ্বোধনের বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে সিডিএ।   

প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কের দু’পাশে ড্রেন কাম ফুটপাত রয়েছে। এই সড়কটির সাথে উভয় পাশের ২০টি বাই লেইন সড়কের সাথে সংযোগ করা হয়েছে। এর ফলে বহু বছর ধরে যাতায়াতের ভোগান্তিতে থাকা পশ্চিম বাকলিয়া ও চন্দনপুরার বিশাল জনগোষ্ঠী উপকৃত হবেন। তবে এসব সংযোগ বাই লেইন থেকে হুট হাট গাড়ি মূল সড়কে উঠার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে এসব বাই লেইন দিয়ে বিপুল সংখ্যক ব্যাটারি চালিত টমটম ও রিকশা অবাধ চলাচল দেখা গেছে। তবে ট্র্যাফিক বিভাগ বলছে উদ্বোধনের পর এসব নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই সড়কটি এলাকার জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। মূল জমি থেকে প্রায় ৩ ফুট উঁচু সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্ন পানি প্রবাহ বজায় রাখতে বেশ কয়েকটি কালভার্ট রাখা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রকৌশলী কাজী কাদের নেওয়াজ টিপু বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় যাতায়াতকারী জনগণকে দ্রুততম সময়ে নগরীতে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সুবিধা করে দিতেই সিডিএ এ প্রকল্প গ্রহণ করে। যদিও ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সড়কটির এলাইনমেন্টের মাঝে বাকলিয়া ডিসি রোড অংশে নির্মিত ১০ তলা একটি ভবন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় আটকে যায় সড়কটি। পরে এলাইনমেন্ট কিছুটা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সড়কের কাজটি শেষ করা হয়।

সিডিএ'র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন ‘সিডিএ যে কোনো প্রকল্প গ্রহণের সময় পরবর্তী ৫০/১০০ বছরের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রাখে। এখানেও সেটি শতভাগ মানা হয়েছে। ফিজিবিলিটি স্টাডির হিসাব মতে, কর্ণফুলী সেতু ও বহদ্দারহাটের মাঝে কোনো বাইপাস করা গেলে দেড় লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন এ পথে যাতায়াত করবে। গত দশ বছরে এ সংখ্যা প্রায় ২  লক্ষে পৌঁছেছে।’

নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর ইত্যাদি এলাকার যানবাহনের চাপ অনেক কমিয়ে আনবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আকাশ চৌধুরি বলেন, এখানে একটা সময় আসা যাওয়া করতেই কর্মঘণ্টা বেরিয়ে যেতো। এখন মিনিটেই চট্টগ্রাম মেডিকেল, জেনারেল হাসপাতাল, কোর্ট বিল্ডিং সহ সর্বত্র দ্রুত যাতায়াত করা যাবে। 

এইচএসসি পরীক্ষার্থী ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, এই সড়কটি আমরা অলরেডি ব্যবহার করে ভীষণ উপকৃত হচ্ছি। আগে চট্টগ্রাম কলেজ, মহসিন কলেজে যেতে আসতে আমাদের খুব সমস্যা হতো এখন কয়েক মিনিটেই পরীক্ষা দিতে যেতে আসতে পারছি।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাংলাদেশ বুলেটিনকে আরো বলেন, ‘নগরীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির কাজ আমরা শেষ করেছি। সড়কের আশপাশের বাসিন্দাদের এই সড়কটি অবৈধ দখলমুক্ত ও পরিছন্ন রাখতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখতে হবে। এই জন্য আমরা স্থানীয়দের সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করি।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত