বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫ ১ শ্রাবণ ১৪৩২
বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
দেশের যোগাযোগ খাতে ঈর্ষণীয় অর্জন ও অগ্রযাত্রা
সৈয়দ আবুল হোসেন
প্রকাশ: রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৪:৩৫ PM

বাংলাদেশ একটি স্বপ্নের নাম। বাংলাদেশ আমাদের স্বপ্নের নির্মাণ। এই বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আমরা ধাপে ধাপে সংগ্রাম করেছি, আন্দোলন চালিয়েছি এবং মুক্তিযুদ্ধ করেছি। বায়ান্নতে ভাষার জন্য আমরা লড়াই করেছি। চুয়ান্নতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছি। বাষট্টিতে আমরা গণতান্ত্রিক শিক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি। ছেষট্টিতে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সংগ্রাম করেছি। আটষট্টিতে সাংস্কৃতিক স্বাধিকারের জন্য আমরা লড়েছি। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সত্তরের নির্বাচনে দাবি আদায়ে আমরা জনগণের ঐতিহাসিক রায় পেয়েছি। একাত্তরের অসহযোগ ও মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতায় আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

১৯৪৭ সাল থেকে দীর্ঘ ২৪ বছরের বন্ধুর পথপরিক্রমায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। এই দীর্ঘ পথযাত্রায় অনেক মানুষ রাস্তায় নেমেছে। অনেক মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছে। অনেক মানুষ কারাবরণ করেছে। অনেক মানুষ নির্যাতিত হয়েছে। অনেক মানুষ অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। অনেক মানুষ শহীদ হয়েছে। অনেক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছে। বাংলাদেশ অজুত প্রাণের দান। বলা হয়, অসংখ্য মানুষের এক স্বপ্নময় নির্মাণ- এই বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ নির্মাণের নানা আন্দোলনে এবং স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির জনক।
স্বাধীনতা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। অথচ দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই দেশের পুনর্গঠন ও সামগ্রিক উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত এই যোগাযোগ ব্যবস্থা। যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। পল এইচ ল্যান্ডিসের ভাষায়- ‘উন্নয়ন হঠাৎ ঘটে যায় না। লক্ষ্য স্থির করে নিজেদের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন দ্বারা উন্নয়ন সম্ভব হয়’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরেই উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করেন। এবং প্রথমেই দেশের ক্ষতিগ্রস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এবং সফল রাষ্ট্রনির্মাণের অভিজ্ঞতাকে তিনি এ ক্ষেত্রে কাজে লাগান।

মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে পাকিস্তানিবাহিনী পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর দেশের অর্থনীতি প্রায় অচল হয়ে পড়ে। খাদ্যশস্য, শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল, কৃষিজাত দ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি ও রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নেন। নৌপরিবহনের উন্নয়ন করেন। যোগাযোগের অন্যান্য ক্ষেত্রসহ বেসামরিক বিমান চলাচলের ওপর গুরুত্ব দেন।

বঙ্গবন্ধুর সরকার দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে দেশের বড় বড় সেতু, বিদ্যুৎকেন্দ্র, টেলিফোন ভবন পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পরে তিনি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, তিস্তা ও ভৈরব রেলওয়ে ব্রিজ পুনর্নির্মাণ করেন এবং তা যানবাহনের জন্য খুলে দেন। বঙ্গবন্ধু একই সঙ্গে যমুনা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত সব ব্রিজ পুনর্নির্মাণ করেন। তিনি চলমান সড়কগুলো মেরামতের পাশাপাশি দেশব্যাপী অতিরিক্ত ৯৭টি নতুন সড়ক নির্মাণ করেন। ঢাকা-আরিচা রুটের বড় বড় সড়ক সেতুগুলো বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে নির্মিত হয়। যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ ছিল বঙ্গবন্ধুর এক বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত। তাঁর গঠিত কমিশন ১৯৭৪ সালে ৪ নভেম্বর যমুনা সেতুর প্রাথমিক সম্ভাব্যতা রিপোর্ট প্রণয়ন করে।

বঙ্গবন্ধুর সময় ১৯৭২ সালের ৭ মার্চের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-যশোর এবং ঢাকা-কুমিল্লা রুটে বিমান চালুর ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় আন্তর্জাতিক রুটে একটি বোয়িং সংযোজিত হয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা-লন্ডন রুটে বিমানের প্রথম ফ্লাইট চালু হয়। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন গঠিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবরণের পর বাঙালি জাতি এক বিভীষিকাময় দৃশ্য অবলোকন করে। এরপর নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যারা ক্ষমতাসীন হয়েছিল- তারা গদি রক্ষায়ই বেশি মনোযোগী ছিল। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে তারা মনোযোগী ছিল না। দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো নির্মাণে তারা গুরুত্ব দেয়নি। সর্বত্র ছিটেফোঁটা কাজসহ ‘আইওয়াশ’ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। ফলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে এগোয়নি। বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে তারা এড়িয়ে গেছে।

বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে। জাতির মূল উদ্দেশ্য ‘ফোকাস’ করে পরিকল্পিত প্ল্যান নিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন। সমগ্র দেশব্যাপী সড়ক, রেল, নৌপথ ও বিমান খাতের উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেয়। নতুন নতুন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। যমুনা সেতু নির্মাণ সমাপ্ত করে দেশের উত্তরাঞ্চলকে সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত করে। এই যমুনা সেতু বর্তমানে ‘বঙ্গবন্ধু সেতু’ নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালে ৪ জুলাই মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তিনি সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে মেগাপ্রকল্পসহ নানা পদক্ষেপ নেন। কিন্তু ২০০১-এ বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সব উন্নয়ন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে। ফলে বাংলাদেশ পরিকল্পিত যোগাযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পথ থেকে ছিটকে পড়ে।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। এরপর টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেন্ট নিয়ে দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত। এ সময় দেশে বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্পসহ অসংখ্য সড়ক, সেতু, নৌপথ ও রেললাইনসহ সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে, জনগণের জীবনমান উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের ভাষায়- বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায়।

২০০৯ সালে সরকার গঠিত হলে আমি যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমি যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করি। নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করি। এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিই। আমি প্রায় তিন বছর যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছি। এ সময় আমি দিনরাত পরিশ্রম করেছি। সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দেশের কাজে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।

এ তিন বছরে আমি সেতু বিভাগের মাধ্যমে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে ‘পদ্মা সেতু’ নির্মাণের যাবতীয় প্রস্তুতি কার্যক্রম শুরু করি। অল্প সময়ে দ্রুততার সঙ্গে সেতুর প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করি। দাতাদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করি। ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়াও শেষ করি। যেখানে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রস্তুতিকাজ ১০ বছর লেগেছিল, সেখানে মাত্র দুই বছরে পদ্মা সেতুর প্রস্তুতিকাজ শেষ করি। পরের ইতিহাস, সবার জানা আছে। বিশ্বব্যাংকের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা অভিযোগে নির্দিষ্ট সময়ে টার্গেট মোতাবেক ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু চালু করা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিচল সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থায়নে ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু করা হয়।

দেশের অর্থনীতিতে ‘পদ্মা সেতু’ একটি জাদুকরি সংযোজন। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক। গৌরবের প্রতীক। পদ্মা সেতু দেশের জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রেষ্ঠ উপহার। পদ্মা সেতু দেশের জিডিপিতে শতকরা ১.২৬ ভাগ এবং দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শতকরা ২.৩ ভাগ অবদান রাখবে।

এ সময় আমি ঢাকা-এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে কর্ণফুলী টানেল, ঢাকার জাহাঙ্গীর গেট, রোকেয়া সরণি টানেল, বেকুটিয়া ব্রিজ নির্মাণ ও বঙ্গবন্ধু সেতুর দুপাড়ে ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপন’ প্রকল্প গ্রহণ করি। ঢাকা মহানগরীর যানজাট নিরসন ও যাত্রী পরিবহনে ‘মেট্রোরেল’ চালুর সিদ্ধান্ত নিই। এগুলো এখন দৃশ্যমান।

আমি যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালে তিন বছরে অনেক ব্রিজ নির্মাণ করে চালু করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদপুর বসিলায় শহীদ বুদ্ধিজীবী সেতু। গাজীপুরে আহসানউল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু। ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতু। চট্টগ্রামের ৩য় কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতু। বরিশালে দপদপিয়া নদীর ওপর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু। ভোগাই নদীর ওপর ভোগাই সেতু প্রভৃতি।
এ ছাড়া দেশব্যাপী আরো কয়েকটি ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। ব্রিজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো: কাজিরটেক ৭ম চীন-বাংলাদেশ সেতু। লেবুখালি ব্রিজ। কুয়াকাটা সড়কে- খেপুপাড়ায় আন্ধামানিক নদীতে শেখ কামাল সেতু। হাজিপুর সোনাতলা নদীর ওপর শেখ জামাল সেতু এবং মহিপুরে শিববাড়িয়া নদীর ওপর শহীদ শেখ রাসেল সেতু। কালনা ব্রিজ। দ্বিতীয় যমুনা ব্রিজ। তৃতীয় শীতলক্ষ্যা ব্রিজ। রুমা সেতু। মেঘনা-গোমতি ব্রিজ। কাচদহ সেতু। গোপালগঞ্জে শেখ লুৎফর রহমান সেতু। দ্বিতীয় কাঁচপুর ব্রিজ নির্মাণ। চট্টগ্রাম-কালুঘাট রেলওয়ে-কাম রোড ব্রিজ। বরিশালে বিভিন্ন উপজেলা কানেকটিং-এর জন্য ৪টি ব্রিজ নির্মাণে উদ্যোগ নিই। এগুলো নির্মাণের পর বর্তমানে চালু হয়েছে। প্রতিটি ব্রিজ দেশব্যাপী এক অভিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে।

আমার মন্ত্রিত্বকালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশব্যাপী এক অভিন্ন ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এরমধ্যে রয়েছে: ঢাকা-চট্টগ্রাম ৪-লেন সড়ক। জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ হাইওয়ে নির্মাণ। মিরপুর-এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ। রংপুরে ৪-লেন সড়ক। ডেমরা-আশুলিয়া ৪-লেন সড়ক নির্মাণ। সায়দাবাদ থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ৮-লেন সড়ক। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা ৪-লেন সড়ক। মোংলায় ১২টি সড়ক নির্মাণ। মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম। জয়দেবপুর-ঢাকা-হাটিকামরুল ৪-লেন সড়ক। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ৪-লেন সড়ক। বগুড়া-নাটোর সড়ক প্রশস্তকরণ। রংপুর বাইপাস। সাউথ-ওয়েস্ট রোড নেটওয়ার্ক প্রজেক্ট। ঢাকা বাইপাস সড়ক। ও ঢাকা রিং রোড নির্মাণ। এ ছাড়া এ সময় যাতায়াতের সুবিধার জন্য ঢাকা শহরে ৩২৫টি চায়নিজ অরিজিন বাস চালু করা হয়।
যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে আমি রেলকে পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন মাধ্যমে গড়ে তোলারও উদ্যোগ নিই। রেলওয়ের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন শুরু করি। উল্লেখ্য, পদক্ষেপ হলো: দেশের রেলবিহীন প্রতিটি জেলায় ধাপে ধাপে রেলপথ সম্প্রসারণ করা। ঢাকা-চট্টগ্রাম সেকশনে লাইন ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা ও ডাবল-লাইনে উন্নীত করা। নতুন কোচ, ইঞ্জিন সংগ্রহপূর্বক আরও নতুন ট্রেন চালুর মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ যাত্রী চাহিদা মেটানোর উদ্যোগ নেয়া। রেলওয়েতে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ প্রদান। রেলকে ধীরে ধীরে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের চেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াত সহজ ও যানজট কমিয়ে আনার জন্য কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালু করেছি।

এ সময়, ঢাকা মহানগীর যানজট নিরসন ও যাত্রী পরিবহনে মেট্রোরেল চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করি। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে রেলওয়েকে আরও গতিশীল ও দক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রেল পরিবহন নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হওয়া। পদ্মা সেতুতে রেলসংযোগসহ যমুনা নদীর ওপর পৃথক রেল ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা। দ্বিতীয় ভৈরব ও তৃতীয় তিস্তা রেল সেতু নির্মাণ। যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা ও মালামাল পরিবহনে সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকোমোটিভ, যাত্রীবাহী কোচ, ফ্লাটওয়াগন, ব্রেকভ্যানসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ করা।

আমার তিন বছর দায়িত্ব পালনের সময়ে দেশে অভিন্ন সড়ক নেটওয়ার্কের লক্ষ্যে এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কোনো সরকারের তিন বছরে এত মেগাপ্রকল্প এবং জনগণের সুবিধাবৃদ্ধির কর্মসূচি নেয়া হয়নি। এ সব কর্মসূচির অধিকাংশ এখন চালু হয়েছে। ফলে এখন জনগণ এ সব সড়ক ও ব্রিজের সুবিধা ভোগ করছে।

২০১২ থেকে ২০২৩ সাল। এ সময় দেশে সড়ক, রেল, নৌপথ ও বিমান পথের উন্নয়নে নানা কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে। এবং আমার সময় গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন সারা বাংলাদেশ সড়ক নেটওয়ার্কে যুক্ত। বঙ্গবন্ধু ব্রিজ সমগ্র উত্তরাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। ‘পদ্মা সেতু’ সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। দেশব্যাপী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার মহাসড়ক নেটওয়ার্ক রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৪৫৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ৪-লেন বা ৬-লেনে উন্নীত হয়েছে।

এ ছাড়া, বাংলাদেশে প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চালু হয়েছে। ৮-লেন বিশিষ্ট যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর, ৪-লেন বিশিষ্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিহ, নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা, গাজীপুর-টাঙ্গাইলসহ বেশকিছু মহাসড়কের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ৪৪১ কিলোমিটার মহাসড়ক উভয়পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ এবং ১৭৬ কিলোমিটার মহাসড়ক সার্ভিস লেন ছাড়া ৪-লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। অধিকন্তু সারা দেশের ১৭৫২ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক উভয় পাশে সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণে নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। আরো ৫৯০ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক সার্ভিস লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণের সম্ভাব্যতা যাচাইসহ বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জাতীয় ও মহাসড়ক নির্মাণে অবদান অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর গ্রাম থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে উপজেলা এবং জেলা শহরের সঙ্গে উপজেলার যাতায়াত সহজিকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাজার হাজার কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। ফলে এখন জনগণের দোরগোড়ায় সড়ক নেটওয়ার্ক পৌঁছে গেছে।

দুর্গম পাহাড়ি তিন জেলার মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মিত হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশের মানুষ, ঢাকার জনগণ মেট্রোরেলে যাতায়াত করছে। মাটির তলদেশ দিয়ে ঢাকা মেট্রোরেলের কাজও শুরু হয়েছে। ঢাকার যানজট নিরসনে বিভিন্ন ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। চাহিদার ভিত্তিতে আরো ফ্লাইওভার ও সড়ক নির্মাণে প্রস্তুতিকরণ কাজ প্রণয়ন করা হয়েছে। বিশ্বমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আরো বেশ কিছু মেগাপ্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল-ভুটানকে নিয়ে সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে চলেছে।

পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা ২০৪১ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের সব মহাসড়ক ৬-লেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের সব মহাসড়ক ৮-লেনে উন্নীত করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলার সঙ্গে রেল পরিসেবা চালু করা হবে। বাংলাদেশে নৌপথের দৈর্ঘ্য ২৪ হাজার কিলোমিটার। পরিবহনযোগ্য নৌপথ প্রায় ৬ হাজার। এই নৌপথের উন্নয়নে সরকার নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক, রেল, আকাশ ও নৌপথকে সমান গুরুত্ব দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজও চলছে। টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক বিজনেস সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে সড়ক, রেল, জল ও আকাশ পথে যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে গড়ে তুলতে চাই’।

বর্তমান বিশ্ব ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এ রূপান্তরিত হয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে আকাশ পথের এখনো কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আকাশপথের যোগাযোগ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, আকাশপথের উন্নয়নের মাধমে দেশের উন্নয়ন দ্রুত করা সম্ভব। তাই তিনি বাংলাদেশ বিমানের বহরে নতুন নতুন বিমান সংযোজন করেছেন। ঢাকার বিমান বন্দরের উন্নয়ন করেছেন। থার্ড টার্মিনাল যুক্ত করে বিমান-ওঠানামা ও যাত্রীসেবা বাড়িয়েছেন। তিনি সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করেছেন। দেশের অন্যান্য বিমান বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরেকটি নতুন বিমান বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বিভিন্ন সম্ভাব্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। আশা করি, এটা সার্বিক বিবেচনায় মাদারীপুরের শিবচরে হবে। যেহেতু মুন্সীগঞ্জে প্রস্তাবটি নিয়ে অগ্রসর হওয়া যায়নি।

টেলিযোগ ব্যবস্থা বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই ‘অপটিক্যাল ফাইভার কেবলস’ সংযোজনের মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে সরাসরি নেটওয়ার্ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। দেশে বর্তমানে ৪টি ভূ-উপকেন্দ্র রয়েছে। বিদেশি নির্ভরশীলতা কমাতে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ স্থাপন করা হয়েছে। টেলিভিশন ও বেতারকে কার্যকর মাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বকে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য পৃথক আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমান সরকার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ করে বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ রূপান্তরের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

যে কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর আবর্তিত হয় দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বাংলাদেশের জন্য এ কথাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে কৃষিজাত দ্রব্যাদি, শিল্পের কাঁচামাল, শিল্পজাত পণ্যসামগ্রী সহজ ও স্বল্প ব্যয়ে স্থানান্তরের সুবিধা হয়। এর ফলে দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। শিল্প ও ব্যবসার প্রসার ঘটে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়। এ জন্যই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’র বাহন বলা হয়।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে পণ্ডিত কার্ল সিডম্যান বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন একটি সম্প্রদায় বা অঞ্চলের জন্য উন্নত ও বিস্তৃতভাবে ভাগ করা অর্থনৈতিক কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মান তৈরি করতে ভৌত, মানবিক, আর্থিক ও সামাজিক সম্পদ তৈরি এবং ব্যবহার করার একটি প্রক্রিয়া’। আর সম্পদ তৈরি ও তা মানুষের কল্যাণে ব্যবহারে দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়। এ প্রসঙ্গে হেনরি এস ফায়ারস্টোন বলেন, ‘নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও তাদের সন্তুষ্টি অর্জন’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বগুণ এবং দেশের মানবিক, সামাজিক ও আর্থিক খাতের পরিকল্পতি উন্নয়নে, উন্নয়নের সঠিক ধারা অনুসরণ করায় আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের ঈর্ষণীয় অগ্রযাত্রায়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিটি কর্মসূচি, উন্নয়ন কর্মসূচি দেশের মানুষের কল্যাণে বাস্তবায়িত হচ্ছে। শেখ হাসিনা উন্নয়নবান্ধব নেত্রী। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নবান্ধব নেত্রী। শিক্ষাবান্ধব নেত্রী। বিদ্যুৎবান্ধব নেত্রী। ডিজিটাল বাংলাদেশের নেত্রী। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার একচ্ছত্র নেত্রী। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। গত দেড় দশকে দেশে যে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে, সে উন্নয়নের ঊর্ধ্বগতি দেখে সারা বিশ্বের নেতারা বিস্মিত, অভিভূত। বাংলাদেশ ভাগ্যবান, আমরা ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনার মতো উদ্যোগী ও সাহসী এবং দেশপ্রেমিক নেতা আমরা পেয়েছি। আল্লাহর কাছে আমরা শুকরিয়া আদায় করছি। মহান আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দীর্ঘজীবী করুন।

বঙ্গবন্ধু বাঙালির অধিকার আদায় ও স্বাধীনতার জন্য জীবনের অধিকাংশ সময় জেল খেটেছেন। তিনি সারাটা জীবন, নিজের মানুষের, বাঙালিকে ভালোবেসেছিলেন। বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন ‘My strength is I love my people. My weakness is I love them too much.’

আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। তাঁর সততা, দেশপ্রেম, আদর্শ ও কর্মপ্রয়াস নিবিড়ভাবে গ্রথিত হয়ে আছে বাঙালির অস্তিত্বে, বাঙালির অস্তিমজ্জায়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ যা আমাদের চিন্তা-চেতনায় একাকার তা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমরা গড়ে তুলব আগামীর বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, বঙ্গবন্ধুর সেই ‘উন্নয়ন পতাকা’ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন। উন্নয়ন পতাকা নিয়ে এগিয়ে চলার উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করা। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম স্বপ্ন- সোনার বাংলা গড়ে তোলা। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিককালের দুটি উক্তি প্রণিধান্যযোগ্য। উক্তি দুটো হলো: ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশের উন্নয়ন করে’। ‘আমার কাছে ক্ষমতা মানেই হচ্ছে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা’। আসুন, আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নসহ দেশের অর্থনৈতিক খাতগুলোকে শক্তিশালী করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।

লেখক : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিককর্মী ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী

বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত