প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:৫৬ AM আপডেট: ০৬.১০.২০২৩ ১২:১২ PM
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় উজ্জ্বল আলো ছড়িয়েছেন শাহীন হাওলাদার। ক্যারিয়ার জীবনে সাংবাদিকতা পেশাকেই মূল লক্ষ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তাই অন্য কোন চাকরীর খোঁজে জীবনে কোন নিয়োগ পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। দেশের ব্যাংক-বীমা খাতের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিভিন্ন পলিসি সংস্কারের সংবাদ প্রকাশ করে হাওলাদার এখন দেশের অর্থনৈতিক সাংবাদিকতার উজ্জল নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত। অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় দেশে-বিদেশে সম্মাননাও পেয়েছেন তিনি।
হাওলাদারের লেখালেখির হাতেখড়ি ছাত্রজীবন থেকেই। নিজের জন্মস্থান ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকেই তিনি শুরু করেন সাংবাদিকতা। এলাকার প্রান্তিক মানুষের সমস্যা-সংকট আর দুর্ভোগের কথা লিখতে থাকেন দৈনিক বরিশাল বার্তা পত্রিকায়। তখন তথ্য-প্রযুক্তির এতো বিকাশ ছিলোনা। হাতে লিখে ফ্যাক্স করতেন অথবা কুরিয়ারে লেখা পাঠাতেন পত্রিকা অফিসে। সেইসব লেখার সংশ্লিষ্ট ছবিসহ তা ফিচার আকারে তার নামে ছাপা হতো ‘বরিশাল বার্তা’ পত্রিকায়। এক পর্যায়ে নিজের কাজের মূল্যায়নের স্বীকৃতি হিসেবে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সদস্য পদ লাভ করেন তিনি।
হাওলাদার কয়েকবছর নিজ জেলায় কাজ করার পর রাজধানী ঢাকায় গিয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। সেখানে গিয়ে পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন তিনি। এরপর যোগ দেন জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকায়। অর্থনৈতিক বিটে কাজ করার দায়িত্ব পান। সেখানে তিনি একের পর এক আলোচিত রিপোর্ট করে আলোচনায় আসেন। দেশের আর্থিক খাতের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত তাঁর অনুসন্ধানী প্রতিবেনগুলো সর্বমহলে প্রশংশিত। অর্থমন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অর্থনৈতিক সেক্টরের এসব রিপোর্টগুলো শাহীন হাওলাদারকে ব্যাপক পরিচিত করে তোলে। সর্বশেষ তিনি ভালো বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধার অফার পেয়ে দৈনিক সময়ের আলো ছেড়ে যোগ দেন পেশাদার গণমাধ্যম ইংরেজি দৈনিক ‘দ্যা বিজনেস পোস্ট’ পত্রিকায়। এই পত্রিকায়ও ব্যাংক ও বীমা খাতের অনিয়ম দুর্নীতি ও এ খাতের নানা সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে বেশ কিছু আলোচিত রিপোর্ট করেন তিনি। সম্প্রতি দেশের বীমা খাতের দুর্নীতি, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়েই তিনিই একমাত্র বিশদভাবে পাঠকের মাঝে তুলে ধরে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন।
সংবাদ অনুসন্ধানের জন্য কখনও পল্লী গ্রাম থেকে শুরু করে ছুটে গেছেন দেশে-বিদেশে। পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবে ভ্রমণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। বিশেষ করে আমেরিকার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনের নিউজ কভার করার দায়িত্বও পান তিনি।
১৯৮৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগি ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহি হাওলাদার পরিবারে শাহীনের জন্ম। তিনি হিসাববিজ্ঞানে অনার্স এবং একই বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। অর্থনৈতিক সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখায় ‘‘গ্লোবাল ইয়ুথ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্র্ড’’ ও ‘মাদার তেরেসা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্র্ড’ পেয়েছেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকেও তাকে পুরস্কৃত করা হয়।
হাওলাদারের ক্যারিয়ার জীবনের নানা প্রসঙ্গ সম্পর্ক জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি সবসময় চেষ্টা করি সকল ধরণের লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকে গণমানুষের জন্য কাজ করতে। সাংবাদিকতা পেশার প্রতি ত্যাগ-তিতিক্ষাই আমাকে সাফল্যের পথে নিয়ে এসেছে।
‘‘ ছোট বেলা থেকেই সাংবাদিকতা পেশাকে ক্যারিয়ার জীবনের একমাত্র পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। তাই জীবনে কোন চাকুরীর জন্যই নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করিনি। সাংবাদিকতা পেশাই এখন আমার ধ্যান ও জ্ঞান। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ইউএনজিএ ২০২৩ সম্মেলন থেকে শুরু করে, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপের বার্ষিক সভার নিউজ কাভার করারও সৌভাগ্য হয়েছে। ব্যাংক-বীমার নানা তথ্যের জন্য জীবনে কতো কষ্ট করেছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। ’’ তিনি বলেন।
শাহীন বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বৃহৎ সংগঠন ‘ঢাকা রিপের্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ)’ সদস্য। এছাড়াও ঢাকার বৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন ‘ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে)’ সদস্য, ঢাকায় কর্মরত বৃহৎ আঞ্চলিক সংগঠন ‘ভোলা জার্নালিস্টস ফোরাম, ঢাকা (বিজেএফডি)’ এর সাংগঠনিক সদস্য হিসেবে রয়েছেন।