পোশাক শিল্পসহ কারখানা ধ্বংস করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। এ আন্দোলন কতগুলো প্রশিক্ষিত কর্মী বা বাহিনী দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে মাঠে নামিয়ে ঘোলা পানিতে তারা মাছ শিকার করতে চায়, এটা হলো তাদের উদ্দেশ্যে। ওরা কারা? শ্রমিকের কল্যাণে যারা কাজ করেন, যারা প্রকৃত শ্রমিক নেতা, তারা বিপদগ্রস্থ ও বিপদগামী শ্রমিক নেতাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
সোমাবার (০৬ নভেম্বর) দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে গাজীপুর-৫ নির্বাচনী এলাকার শিল্প কারখানা মালিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য স্থানীয় এমপি মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্য বলেন, সরকার ইতোমধ্যে মজুরী কমিশনের সকল সদস্যদেরকে নিয়ে একাধিক মিটিং করেছে। হঠাৎ করেই গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী, মৌচাক, কাশিমপুর, বাসন, শ্রীপুরের মাষ্টারবাড়ী এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়। শুধু শ্রমিক অসন্তোষ নয়, তারা বিভিন্ন কলকারখানায় ভাংচুর করেছে, রাস্তা অবরোধ করেছে, মানুষ মারছে। নূন্যতম মজুরী ২৩ হাজার টাকা করার কারনে তারা এ আন্দোলন করেছে। মুজুরী বৃদ্ধিও বৈঠক চলামান থাকা অবস্থায় সিদ্ধান্ত হওয়ার আগেই কেন আন্দোলন, কেন অগ্নিসংযোগ, শিল্প কারকাখানায় হামলা। এতে বুঝা যায় আমাদের পোশাক শিল্পসহ কারখানা ধ্বংস করার জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে।
শ্রমিক প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার কলকারখানা থাকলেতো চাকরি হবে শ্রমিকের। শ্রমিক থাকলে আপনি শ্রমিক প্রতিনিধি হবেন। কলকারখানা ধ্বংস, ভঙ্গে ফেললে এবং আগুন দিয়ে পুড়ে ফেললে শ্রমিকেরা কাজ করবে কোথায়? শ্রমিক না থাকলে আপনি শ্রমিক নেতা হবেন কিভাবে? প্রত্যেকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ঢাকায়। সমস্যা কিন্তু প্রধান কার্যালয়ে হয় না। তাদের প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায়। আন্দোলনের সমস্যাটা হলো স্ব স্ব এলাকায়। সমস্যা হলো কারখানায়। যেখানে সমস্যা সেখানেই সমাধান। ওই জায়গায় যারা শ্রমিক প্রতিনিধিত্ব করে, জনপ্রতিনিধিত্ব করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও সাংবাদিকসহ সকলের সাথে মালিক পক্ষদের সাথে মতবিনিময় করতে হবে। তাদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই কারনে আমি আজকের এই মতবিনিময় সভার উদ্যেগ নিয়েছি। এ এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে তারা (শিল্প মালিক) যেমন লাভবান হচ্ছে, তেমনি আমিসহ এলাকার সকলেই লাভবান হচ্ছে। আমার ও আমাদের দায়িত্ব হলো আমার এলাকায় শিল্প বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, এক শ্রমিক নেতা আমাকে জানায় গত দুই দিন শ্রীপুরের মাষ্টারবাড়ী এলাকায় অল্প একটু সমস্যা হয়েছে। প্রকৃত শ্রমিক তাদের নিজ নিজ স্থানে থেকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান ও জীবিকার স্থান শান্তিপূর্ণ রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ শান্ত রাখা ও শিল্প বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন অ্যাডভোকেট রীনা পারভীন, তিলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতন সরকার, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হারুন-অর রশীদ ফরিদ, শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম মোল্লাসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধি, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আইনশৃঙ্খল বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।