মনে হচ্ছে মূল্যস্ফীতি এই সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর চাপে ও তাপে কম ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের জীবনচলা আসলেই অসম্ভব মনে হচ্ছে। বিশেষ করে কম আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। গেল অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি আগের মাসের চেয়ে আরও দশমিক তিন শতাংশ বেড়ে ৯.৯৩ শতাংশ হয়েছে। গত পাঁচ মাসের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ। ২০২২ সালের অক্টোবরে তা ছিল ৮.৯১ শতাংশ। অর্থাৎ গত এক বছরে গড় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ১.০২ শতাংশ। গ্রামীণ মূল্যস্ফীতি এই মাসে ছিল আরও বেশি (৯.৯৯%)। সেপ্টেম্বর থেকে দশমিক চার আট শতাংশ বেশি। তার মানে ২০২৩ সালে অক্টোবর নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৫%। আর চলতি অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি প্রক্ষেপণ করা হয়েছিল ৬ শতাংশ। এই হার অর্জন যে খুবই কষ্টকর হবে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর নিজেই স্বীকার করেছেন। গড় মূল্যস্ফীতির চেয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতির চেহারা আরও ভয়ঙ্কর। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এ দুমাস জুড়েই সারা দেশে গড় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের বেশি বলে বিবিএস-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এইসময়টায় আমরা দেখতে পেলাম যে গ্রামাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি শহরের তুলনায় বেশি ছিল। অক্টোবরে শহরাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.১১ শতাংশ হলেও গ্রামাঞ্চলে ছিল ১২.৫৪ শতাংশ। ফলে শহরের তুলনায় গ্রামে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির হার ০.৪৩ পারসেন্টেজ পয়েন্ট বেশি ছিল। তার আগের মাস, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে এই ব্যবধান আরও বেশি ছিল। শহরাঞ্চলে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.০১ এর বিপরীতে গ্রামাঞ্চলে ছিল ১২.৫১ শতাংশ। তার মানে ব্যবধানটি ছিল ০.৫০ পারসেন্টেজ পয়েন্টের।
নিঃসন্দেহে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য মূল্যস্ফীতির মাঝে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতির সাথে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের কষ্টেরও গভীর সংযোগ রয়েছে। এমনিতেই ধরে নেয়া হয় যে গ্রামে যেহেতু খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় তাই সেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি শহরের চেয়ে কম হবে। কিন্তু বাস্তবে গ্রামেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। কেন হলো এমন পরিস্থিতি সে বিষয়ে গভীর কোনো গবেষণা হয়নি। তবে যতোটা অনুমান করা যায় তা হলো চাহিদা এবং সরবরাহ দু’দিক থেকেই আক্রমণ এসেছে গ্রামীণ ও সার্বিক মূল্যস্ফীতির ওপর। চাহিদার দিক থেকে বলা চলে বাজারে প্রচুর টাকা ঘোরাফিরা করছে। গ্রামে বরং মুদ্রা সরবরাহ আরও বেশি। মূলত প্রবাসী আয় প্রবাহের কারণে তা বাড়ছে। অন্যান্য দেশে মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য যেমন আক্রমণাত্মক ভাবে নীতি সুদ হার বাড়ানো হয় আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা করতে বেশ খানিকটা দ্বিধান্বিতই মনে হয়েছে। গত এক বছরে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা ফেড বারো বার নীতি সুদ বাড়িয়েছে। আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার নীতি সুদ হার গত তিন মাসের মধ্যেই ৯% বাড়াতে দ্বিধা করে নি। আর আমরা বাড়িয়েছি ১.৯৩ শতাংশ। তাই শ্রীলঙ্কার মূল্যস্ফীতি এখন এক শতাংশের আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। ওই দেশের কেন্দ্র্রীয় ব্যাংক খুবই স্বাধীনভাবে সাহস করে মুদ্রানীতিকে কঠিন করার সক্ষমতা দেখিয়েছে। জানি এতে করে তাদের প্রবৃদ্ধির হার কমে নেতিবাচক হয়ে গেছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধি নয় সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা অর্জনই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে বাগে এসেছে। এখন তারা ধীরে ধীরে হয়তো সুদের হার কমাবে। আর তখন বেশি করে ঋণের প্রবাহ বাড়বে। প্রবৃদ্ধির হারও বাড়বে। মূল্যস্ফীতির একটি বড় অংশ আমদানি মূল্য থেকেও আসে। শ্রীলঙ্কা আমদানি নিয়ন্ত্রণের বড়ো উদ্যোগ নিয়েছিল। আমরাও নিয়েছি। বিশেষ করে বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বেশ বড় হারেই আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। না করেও উপায় ছিল না। কেননা আমদানি মূল্য শোধ করার মতো পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ বাজারে ছিল না। বাধ্য হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে আমদানি মূল্য পরিশোধের উদ্যোগ নেয়। মূলত জ্বালানি তেল, এলএনজি, ভোজ্য তেল, প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কেনার জন্য এই ডলার সমর্থন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে তার রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে। চলতি হিসেবে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেবার পর আমদানি মূল্যকে টাকায় আরও বাড়তে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের অবমূল্যায়ন করে। আশা ছিল এর ফলে আমদানির চাহিদা কমবে। বাস্তবে হয়তো কমেছেও। সেই কারণে হয়তো চলতি হিসেবে ঘাটতি কমেছে। এখন তো উদ্বৃত্ত। কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় অনেক ছোট খাট আমদানিকারক বেশ বিপদে পড়েছেন। এতো দামে ডলার কিনতে তাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। আবার টাকা যোগাড় করতে পারলেও ডলার মিলছে না আনুষ্ঠানিক বাজারে। তখন তারা ‘ছায়া বাজার’ বা হুন্ডিতে এসব পণ্য আমদানির চেষ্টা করে চলেছে। সম্প্রতি ডলারের সাথে টাকার বিনিময় হারকে অনেকটাই নমনীয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো তাদের খুশি মতো দামে ডলার কিনতে পারছিলো। ব্যাংকগুলো নিশ্চয় তাদের কাছ থেকে তার চেয়ে কম দামে ডলার কিনতে পারছিলো না। কিন্তু ব্যাংক তখনো আমদানিকারকদের কাছে ১১১ টাকা ডলার বিক্রি করতে বাধ্য ছিলো যা এখনো বলবৎ রয়েছে। তখন কেনা ও বেঁচার মাঝে এখন পার্থক্য প্রায় বারো-তেরো টাকা যা এখন দাঁড়িয়েছে চার টাকা। এই পার্থক্য কীভাবে পূরণ হচ্ছে? নগদে? পরিচ্ছন্ন ব্যাংকগুলো নিশ্চয় এই অসচ্ছ পথে হাঁটবে না। তাহলে বড় বড় আমদানি ব্যবসা তারা করবে কী করে? এসব অস্পষ্টতা ও অস্বচ্ছতার কারণেই বৈদেশিক মুদ্রার বাজারটি এমন ‘টালমাটাল’ বা ভোলাটাইল হয়েছে বলে অনুমান করা যায়। এই প্রেক্ষাপটেই বাফেদা ও এবিবি সিদ্ধান্ত পাল্টে বলেছে যে এখন থেকে ব্যাংকগুলো এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে প্রণোদনা হিসেবে নিয়েই ১১৫ টাকার বেশিতে ডলার কিনতে পারবে না। তবে আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির সময় তারা ১১১ টাকার বেশি চার্জ করতে পারবে না। যদি ধরেও নেই যে নতুন সিদ্ধান্ত ঠিকঠাক মতোই ব্যাংকগুলো মানবে তাহলেও চার টাকার হেরফের মেলাবে কি করে? তাদের কি সিএসআর তহবিল এতোটা আছে? থাকলেও কেনই বা ব্যাংক চ্যারিটির মতো প্রতি ডলারে চার টাকা (বাস্তবে হয়তো আরও বেশি) লস দিয়ে ডলার কেনা-বেচা করবে? সব মিলে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে এসব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। সরবরাহও সংকোচিত হচ্ছে। এভাবেই পণ্য সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। শুরুতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার সাথে হালের ডলার সংকটের প্রভাবও পরিবহন খরচে পড়েছে। তাই আমদানি সম্পর্কিত মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে তো বাড়ছেই। আর ডলারের বাড়ন্ত দামের প্রভাব তো বাজারে পড়ছেই। সরবরাহ চেইনের এই যখন অবস্থা তখন মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা। চলছে হরতালের পর অবরোধ। ফের ফিরে এসেছে অর্থনীতির চাকাকে আটকে দেবার অপসংস্কৃতি। মানুষ ও পণ্যের চলাফেরা বিঘ্নিত হচ্ছে। মানুষ এখন ঘরের বার হতে বার বার দুঃশ্চিন্তা করেন। অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যবসা-বাণিজ্যও এই আটকে দেবার অপসংস্কৃতির কারণে অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছে। ফলে স্থানীয় পর্যায়ের সরবরাহ চেইনেও বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। আর পরিবহন খাতের বিপর্যয় তো চোখেই দেখছি। দূরপাল্লার বাস বা ট্রাক সেভাবে চলছে না। মাঝে মাঝেই এগুলো আগুনের মুখে পড়ছে। অথচ এসব পরিবহনের চালক ও হেলপারদের আয় রোজগারের কথা ক’জনেই বা ভাবেন। এই বাস্তবতায় মানুষ খুবই কষ্টে রয়েছেন। অনানুষ্ঠানিক খাতের ছোট-খাট উদ্যোক্তা, শ্রমজীবী পরিবহন ও অন্যান্য ‘দিন আনি দিন খাই’ শ্রমিকদের বেঁচে থাকাই যে দায়। পথও নিরাপদ নয়। যখন তখন ভাঙ্গচুর ও আগুনের ভয় লেগেই আছে। এমনি এক অনিশ্চিত পরিবেশে ‘সাপ্লাই চেইন’ আরও ভঙ্গুর হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। তাই জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে নভেম্বরেও মূল্যস্ফীতি অক্টোবর থেকে বেশিই হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর পর কী হবে বলা মুশকিল। রাজনৈতিক অশান্তি দূর না হলে মূল্যস্ফীতি কমানো বেশ মুশকিল হবে। বিশেষ করে সরবরাহজনিত ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে না। সে কারণেই চাহিদাজনিত মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য মুদ্রানীতির কঠিন ভঙ্গিটি বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি কৃষি, ক্ষুদে ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য কৃষি ও অকৃষি ঋণ আরও বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে উদ্যোগী হতে হবে। পারলে এমআরএর সাথে আলাপ করে পুনঃঅর্থায়ন তহবিল তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। ছোট ও মাঝারি এমএফআইসমূহ এমআরএর অনুমোদন সাপেক্ষে যাতে সস্তায় এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা খুবই সম্ভব। কভিডকালে বাংলাদেশ ব্যাংক এভাবে বিশেষ তহবিল তৈরি করেছিল। এমআরএর অনুমোদন সাপেক্ষে এমএফআইগুলো সেই তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে তা গ্রাহকদের হাতে পৌঁছে দিয়েছিল। এই অর্থের পুরোটাই আবার বাংলাদেশ ব্যাংক ফেরৎ পেয়েছে। একই ভাবে ছোটখাট আমদানি কারকদের জন্যও আলাদা করে একটি আমদানিসহায়ক তহবিল তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তা না হলে প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ঘাটতি আরও তীব্র হবার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর ভরসা করে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ওএমএস বা খোলা বাজারে কম দামে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেল বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া যায়। সংশ্লিষ্ট এসব ট্রাকের এবং স্থানের সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে। তাছাড়া, খাদ্য মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে বাঁচানোর জন্য অতিদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা আরও বাড়ানো যেতে পারে। কৃষক যাতে বেশি দামে সার ও বীজ কেনার ভয়ে কৃষি উৎপাদন কমিয়ে না দেয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে এসব উপকরণ সাশ্রয়ী মূল্যে কেনার জন্য সংশ্লিষ্ট ভর্তুকি বাড়াতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ দেবার পথ থেকে সরে এসেছে। এতে করে মূল্যস্ফীতি খানিকটা হলেও কমবে। কিন্তু এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে সস্তায় প্রচুর ঋণ দেয়া হচ্ছে। এতে করেও চাহিদা-জনিত কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। এই অর্থের সরবরাহ কমানোর জন্য নীতি সুদ হার আরও বাড়ানো যেতে পারে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলো (বিশেষ করে মন্দ ব্যাংকগুলো) যাতে অযথা অপ্রয়োজনীয় ঋণ না দিতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য ঋণের আকার নিয়ন্ত্রণ এবং তার মনিটরিং এর ব্যাপ্তি বাড়ানো যেতে পারে। আসলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সরকার কিংবা ব্যক্তিখাতকে সহজেই অর্থ সরবরাহ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সবশেষে বলবো বাজারে যে বিশৃঙ্খলা প্রতিযোগিতার অভাব এবং কতিপয়ের প্রাধান্য আছে সে সব কিছু সমন্বিতভাবে মোকাবেলা করে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। গ্রামের বাজারব্যবস্থা এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার দিকেও মনোযোগ কাম্য। গ্রামে-গঞ্জে ছোট আকারের কোল্ড স্টোরেজ ও পাড়ায় পাড়ায় প্রাকৃতিক কোল্ড স্টোরেজ তৈরির উদ্যোগ নেবার সুযোগ এখনও রয়েছে। মোদ্দাকথা, মুদ্রানীতি (অবশ্যই বাজারনির্ভর সমাধানভিত্তিক) ও রাজস্বনীতির (সীমিত বাজেট ঘাটতি সম্পন্ন) সমন্বয়ের পাশাপাশি বাজার ব্যবস্থার ওপর সামাজিক ও প্রশাসনিক মনিটরিং আরও জোরদার করা গেলেই মূল্যস্ফীতি অনেকটাই বাগে আনা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় টাকার অংকে ডলারের দাম তিরিশ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে। শুল্ক হারও স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই হারে বেড়ে গেছে। তাহলে চাল ডালের মতো অন্যান্য নিত্যপণ্য বা প্রয়োজনীয় আমদানি করা পণ্যের দাম খানিকটা তো কম রাখা সম্ভব। ফলে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি কিছুটা হলেও কমানো যায়। সাধারণ ভোক্তাদের অল্প হলেও বাড়তি দামের চাপ থেকে রেহাই দেয়া যায়।
লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর