টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও টাঙ্গাইল জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদি এশা মির্জার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের বোয়ালী এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এশা মির্জা ওই এলাকার পুলিশ সদস্য মৃত লতিফ মির্জার মেয়ে।
এশা মির্জার বোন লুনা মির্জা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তার সাথে এশার মুঠোফোনে সর্বশেষ কথা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে তার ননদ আমার স্বামীকে ফোন করে জানায় এশা দরজা লাগিয়ে দিয়েছে। তার ছেলে কান্না করছে। দরজা ধাক্কা-ধাক্কি করার পরও দরজা খুলছে না। পরে তার ননদ দরজা ভাঙার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি শেখ আবু ছালাম মিয়া বলেন, লাশের সুরুতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দীন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঢাকার ক্রাইমসিনকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করবে।
গোলাম কিবরিয়া বড় মনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই। ধর্ষণ মামলায় তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় বড় মনিরের বিরুদ্ধে এশা বাদি হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় এশা ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় বড় মনিরের স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কিশোরীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া না গেলেও অন্তঃসত্ত্বার প্রমাণ পায় মেডিক্যাল বোর্ড। পরে ৬ এপ্রিল দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই কিশোরী।
গত ২১ আগস্ট ধর্ষণ মামলায় গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের হাইকোর্টের দেয়া জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
১৫ মে টাঙ্গাইলের চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন বড় মনি। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাহমুদুল মহসীন জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ দিকে ৩০ জুন এক বেসরকারি ক্লিনিকে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন এশা। গত ১১ জুলাই বিচারপতি শেখ জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বড় মনিরকে জামিন দেয়। পরে জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর চেম্বার আদালত তার জামিন স্থগিত করে দেয়।
২১ আগস্ট ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের হাইকোর্টের দেয়া জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
৯ অক্টোবর নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের ফল পক্ষে আসায় বড় মনিরকে জামিনের আদেশ দেন আপিল বিভাগের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের আপিল বেঞ্চ।