বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১০ মাঘ ১৪৩১
বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
নারীদের চুল কাটা কি হারাম?
বুলেটিন ডেস্ক
প্রকাশ: সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩, ৫:৫৭ PM
চুল নারীর সৌন্দর্য। নারীদের চুল বড় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। ইসলাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যচর্চার প্রতি বরাবরই উৎসাহিত করে। নারীরা চুল লম্বা রাখবে আর পুরুষরা চুল ছোট রাখবে এটাই প্রকৃত নিয়ম। অকারণে নারীরা চুল ছোট করবে না। আর পুরুষরাও নারীদের মতো বড় করে চুল রাখবে না। এখন জানান বিষয় হচ্ছে, মেয়েরা চুল কাটতে পারবে? কাটলে কতটুকু কাটতে পারবে, এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা কী?

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। সব বিষয়েই কোরআন ও হাদিস থেকে জানতে পারি। হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সা. ‘নারীদের সাদৃশ্যগ্রহণকারী পুরুষদের ওপর, পুরুষদের সাদৃশ্যগ্রহণকারী নারীদের ওপর লানত করেছেন’ (বুখারি ৫৮৮৫)। তবে পুরুষদের সঙ্গে, বিধর্মী বা ফাসেকদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হলে সৌন্দর্য বাড়াতে নারীদের জন্য তুলনামূলক চুল ছোট করা জায়েজ আছে। (ফাতাওয়া শামি ৯/৫৮৩, ফাতাওয়া আলমগিরি ৫/৩৫৮)

নারীদের চুলের ক্ষেত্রে শরিয়তের মৌলিক নীতিমালা ৩টি। ১. নারীরা চুল লম্বা রাখবে। হাদিস শরিফে আছে, উম্মাহাতুল মুমিনিন রা. চুল লম্বা রাখতেন। ২. এ পরিমাণ খাটো করবে না যে, পুরুষের চুলের মতো হয়ে যায়। হাদিসে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী মহিলার প্রতি অভিসম্পাত করা হয়েছে। ৩. চুল কাটার ক্ষেত্রে বিজাতীয়দের অনুকরণ করবে না। কারণ হাদিসে বিজাতীয়দের অনুকরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। 
 
সুতরাং যে নারীর চুল এত লম্বা যে, কিছু অংশ কাটলে পুরুষের চুলের সাথে সাদৃশ্য হবে না তার জন্য ঐ পরিমাণ কাটা জায়েজ হবে। পক্ষান্তরে যার চুল তত লম্বা নয়; বরং অল্প কাটলেই কাঁধ সমান হয়ে যাবে। পুরুষের বাবরি চুলের মতো দেখা যাবে তার জন্য অল্প করেও কাটার অনুমতি নেই।
 
তবে জটিল অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে চুল ছোট করা, এমনকি জরুরতবশত: কামানোরও অনুমতি রয়েছে। অতএব চার আঙুল পরিমাণ কাটা যাবে-এ কথা সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়; বরং চুল বেশি বড় থাকলে যেমন কোমর সমান চুল থাকলে চার আঙ্গুলের বেশি পিঠের মাঝামাঝি করে কাটা জায়েয। তবে সর্বাবস্থায় ফ্যাশনের অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
 
উপর্যুক্ত মূলনীতির আলোকে মহিলারা তাদের চুল খাটো করতে পারবে। এর জন্য সময়েরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আর কেউ নাজায়েজ পরিমাণ কেটে ফেললে বা বিজাতীয় অনুকরণে চুল কেটে করে ফেললে তওবা ইস্তিগফার করতে হবে। (বুখারি ২/৮৭৪; জামে তিরমিজি ১/১০৩; মুসলিম ১/১৪৮; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৪৭২; আলমুফাসসাল ফি আহকামিল মারআতি ওয়াল বায়তিল মুসলিম ৩/৪০০, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৭)
 
পুরুষদের সাথে ও বিধর্মী বা ফাসিকদের সাথে সাদৃশ্য না হলে স্বামীকে খুশি করতে বা সৌন্দর্য বাড়াতে নারীদের জন্য চুল ছোট করা জায়েজ আছে। কিন্তু যদি পুরুষদের মত ছোট ছোট চুল করা হয়, তাহলে তা অবশ্যই নাজায়েজ। কোনও বিধর্মীর স্টাইলের নকল হয়, তাহলেও তা পরিত্যাজ্য। (বুখারি ২/৮৭৪; জামে তিরমিজি ১/১০৩; মুসলিম ১/১৪৮)
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত