মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
হাইকমান্ডের নির্দেশেই বিস্ফোরক মজুদ করতেন যুবদল নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩, ৬:৩৭ PM
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা তৈরির জন্য বিস্ফোরক সংগ্রহ করে নিজের কাছে মজুত রাখছিলেন যুবদলের কর্মী বাবুল মিয়া। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে এবং যুবদলে বড় পদ পাওয়ার আশ্বাসে বিভিন্ন নেতাকর্মীর কাছে ওই বিস্ফোরক সরবরাহ করছিলেন তিনি। এসব বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে ককটেল ও বোমা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানো হতো। এভাবে অবরোধ ও হরতালে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছিল, ক্ষতি করা হচ্ছিল জানমালের। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বড় নাশকতার পরিকল্পনাও ছিল তার।

মো. বাবুল মিয়াকে (৪০) গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়ার দাবি করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। বুধবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল কালভার্ট রোড এলাকার একটি বাড়ি থেকে মো. বাবুল মিয়া (৪০) ও মো. মাসুদ শেখকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় র‌্যাব-৩। তাদের কাছ থেকে উচ্চমাত্রার ছয় কেজি ১০০ গ্রাম বিস্ফোরক পাউডার, ১৫৭ বোতল ফেন্সিডিল, একটি ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্র, ১০টি মোবাইল ফোন এবং নগদ অর্থ উদ্ধার করার তথ্যও জানানো হয়েছে। 

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাবুল মুগদা থানার ৭২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী। সে মুগদা থানা যুবদলের পদপ্রত্যাশী। নাশকতামূলক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিলে তাকে উচ্চপদ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় দলের উচ্চ পর্যায় থেকে। সেই আশ্বাসে সে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা তৈরির উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পাউডার সংগ্রহ করে নিজের কাছে মজুত রাখে। এ কাজে তাকে সাহায্য করে মুগদা থানার যুবদল নেতা জসীমউদ্দিন বাবু ও মো. আল মামুন পান্না। বিভিন্ন সময় দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে নেতাকর্মীদের কাছে সেসব বিস্ফোরক সরবরাহ করতো বাবুল।’

র‍্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এবং নির্বাচনের সময় বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির জন্য এই বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে বাবুল। ২০১৮ সালের নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর সময় তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’

মাসুদ শেখ সম্পর্কে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সে ১৯৯৮ সালে খুলনা জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে। ২০০২ সালে ঢাকা আল-আমিন বিস্কুট কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করে নেয়। ছয় বছর চাকরি করে। পাশাপাশি সে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ নিজেকে বিএনপির সমর্থক বলে পরিচয় দেয়। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এবং একই দলের সম্পৃক্ততার কারণে মাদক ব্যবসা বিস্তারে গত এক বছর ধরে বাবুলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে মাসুদ।’

আরিফ মহিউদ্দিন জানান, বাবুল মুগদা এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার পর ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডে মাসুদের বাসায় আত্মগোপন করতো। বাবুলকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করতো এবং বিস্ফোরক দ্রব্য নিজ বাসায় গোপনে রাখতে সহায়তা করতো মাসুদ।

মাসুদের বাসায় বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীর যাতায়াত ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মাদক সরবরাহ করে আসছিল। এর আগে সে মাদকসহ তার নিজ এলাকা খুলনায় গ্রেফতার হয়। তার পরিবার গত ১৫ বছর ধরে বাসাবো এলাকায় বসবাস করছে। কিন্তু মাসুদ ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে মাদক ও বিস্ফোরক দ্রব্য মজুত করতো। অবরোধকে কেন্দ্র করে তার বাসায় ককটেলসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি করা হতো এবং সেখানে বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীর যাতায়াত ছিল।’
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত