শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫ ৩ শ্রাবণ ১৪৩২
শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫
নতুন রাস্তায় পুরাতন ইট দিয়েই গাইড ওয়াল নির্মাণ
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩, ৩:৫০ PM
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি হইতে রাইশিমুল ভায়া ঘাটেরকোনা রাস্তা পুন:বাসন চেইনেজ ১৫০০ থেকে ৩৫০০ মিটার  রাস্তায় ইউনিব্লক দিয়ে রাস্তা নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। 

স্থানীয় এলজিইডি কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে গ্রামীন সড়ক রক্ষনাবেক্ষন প্রকল্পের আওতায়  ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ইউনিব্লক দিয়ে প্রাক্কলিত মূল্য ১,৩৭,৪৪,১৭১.০০ চুক্তিমূল্য ১,৩০,৫৬,৯৬২.৪৫ টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমটার সড়ক নির্মাণের কাজ পায় ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার মেসার্স নোহা এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। যার কার্যাদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ২১ সেপ্টম্বর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলে বর্তমানে রাস্তার কিছু কাজ সম্পন্ন হলেও বেশীর ভাগ কাজ বাকী রয়েছে। 

শুক্রবার (২৪নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা গিয়ে দেখা যায় কাজের দায়িত্বে থাকা উপসহকারীকে রাস্তায় খুজে পাওয়া যায়নি।  কাজের প্রকল্পের নেই কোন সাইনবোর্ড।  স্থানীয় লোকজন বৃহ:স্পতিবার পুরাতন ইট দিয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণে বাধা দিলেও  কাজ বন্ধ করেনি ঠিকাদারের লোকজন। পরে খবর পেয়ে গনমাধ্যম কর্মীরা ছুটে গেলে এলজিইডি অফিসের নির্দেশে কাজ বন্ধ রাখেন ঠিকাদারের লোকজন। 

দুই কিলোমিটার সড়কের এজিনের ইট রেখেই পুরাতন রাস্তা কেরিপাই করে ইটের খোঁয়া দিয়ে রোলার করার কথা থাকলেও নিয়ম না মেনেই ঠিকাদারের ইচ্ছে মতে ইটের খোঁয়া না দিয়েই হালকা রোলার করে পুরো রাস্তায় বালু দিয়ে রাস্তার সাইড দিয়ে ব্লক বসানো শুরু করেছে। কেরিপাই করার পর রাস্তার দুই পাশের ইট উঠিয়ে  রাখে ঠিকাদারের লোকজন। প্রাক্কলনে আছে নতুন ১ নাম্বার ইট দিয়ে সোজা করে গাইড নির্মাণ। প্রাক্কলন অনিসরণ না করে গাইড ওয়াল আকাঁবাকাঁ করেই  রাস্তার এজিনের পুরাতন ইট দিয়েই রাস্তার পাশে গাইড ওয়াল নির্মাণ করে যাচ্ছে। দুই ট্রাক ইট ঠিকাদার নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন কাজে কর্মরত  থাকা একজন শ্রমিক।

স্থানীয় একাধিক বাসিন্দারা জানান, ‘রাস্তার কাজের মান খুবই খারাপ, রাস্তায় রোলার দিয়ে বালু দেওয়ার পরে দুই সাইডের এজিনের ইট (দুই ট্রাক) নিয়ে তুলে নিয়ে গেছে ঠিকাদার। এলজিডি অফিসের কোন লোক রাস্তায় তদারকি করতে আসেনা ঠিকাদারের ইচ্ছে মতে কাজ করে যাচ্ছে। রাস্তার গাইড ওয়ালের পিলারগুলো নিম্নমানের।  পুরাতন ইট দিয়ে গাইড ওয়াল আকাঁবাকাঁ করে নির্মাণ করতে দেখে আমরা কয়েকজন মিলে বাঁধা দিলে আমাদের কথা পাত্তাই দেয়নি ঠিকাদার। আপনারাই দেখেন এভাবে কাজ কি কোন কাজ কেউ করে।’ 

স্থানীয় শফিকুল ইসলাম জানান, মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা  নজরুল ইসলাম সরকার সাবেক এমপি সাহেবের বাড়ির সামন থেকে আব্দুল মান্নান চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারের উপরে রাস্তার দুই পাশের এজিনের পুরাতন ইট তুলে গভীর রাতে ট্রাক ভর্তি করে ভোরে  ঠিকাদারের লোকজন  নিয়ে গেছে। আনুমানিক ২৬-২৮ হাজার ইট হতে পারে। পরে আরেক দিন গভীর রাতে  ট্রাক নিয়া আইছে পরে আমরা বাঁধা দিলে অর্ধেক রাস্তার  ইট নিতে পারেনি।  এই ইট ভাঙ্গিয়াই আরসিসি ঢালাই দিতেছে। 

সহনাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল জানান, উপজেলা প্রকৌশলী আমাকে নিয়ে রাস্তা পরিদর্শন করেন। এ উপজেলায় এই প্রথম ইউনিব্লক দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে বিষটি আনন্দের।  ‘স্থানীয়রা লোকজনের মুখে শুনেছি  রাস্তার পুরাতন দুই ট্রাক  ইট  ঠিকাদার কিভাবে নিয়ে যায়। কাজে অনেক অনিয়ম হচ্ছে। এই সব ঠিকাদার বর্তমান সরকারের দুর্নাম করছে। প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই রাস্তার ইট ফিরিয়ে এনে যেন ভালো মানের কাজ করা হয়।’

মেসার্স নোহা এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি জনি'র কাছে রাস্তার অনিয়ম, পুরাতন ইট ব্যবহার ও দুই ট্রাক ইট নিয়ে যাওয়ার কথা মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে প্রতিবেদকের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, আপনি আর আমাকে ফোন দিবেন না বলে সংযোগটি কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

এবিষয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মনি জানান, ঠিকাদার  আমাকে না জানিয়েই কাজ শুরু করেছে। যদি জানাইতো তাহলে অফিসের লোক পাঠাইতাম। লোকমুখে শুনেছি কিছু ইট ঠিকাদার নিয়ে গেছে তবে আমরাতো আর রাতে ডিউটি করিনা। 

এবিষয়ে  উপজেলা প্রকৌশলী  (এলজিইডি)  অসিত বরণ দেব জানান, পুরাতন ইট দিয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণের কথা শুনে তাৎক্ষনিক ঠিকাদারের 
মোবাইল ফোনে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন।  রাস্তার ইট ঠিকাদার নেওয়ার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি। 


« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত