নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় প্রশাসন কে তোয়াক্কা, না করে কৃষি জমির উপরের অংশ (উর্বর মাটি, টপ সয়েল) কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভাটা মালিকরা। উর্বর মাটি ইটভাটায় চলে যাওয়া ফসলি জমির সর্বনাশে ফসল উৎপাদন কমছে।
শুধু তাই নয় ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে পরিবেশ। মাটিতে যে জিপসাম বা দস্তা থাকে তা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে মাটির জৈব শক্তি কমে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখিন সহ বিশ্বে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে। উপরি ভাগের জৈব পাশাপাশি মাটি পরিবহনকারী ট্রলি ও ট্রাকগুলো যেনতেনভাবে মাটি ভর্তি করে মহাসড়ক ও ইউপি’র গ্রামীণ কাচা-পাকারাস্তাগুলোতে চলাচল করায়, মাটি পড়ে রাস্তার ভিটুমিন নষ্ট ও রাস্তা ধেবে গিয়ে জনপথের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এতে বর্ষা আসলেই পাকা রাস্তার প্লাস্টার উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়।
ভারী যানবাহন গ্রামীণ রাস্তাগুলোতে চলাচলে কেউ বাধা না দেওয়ায় হুমকীর মুখে যাচ্ছে রাস্তাগুলো। এতে সরকারী আইন অনুযায়ী কৃষি জমির মাটি ভাটায় ব্যবহার নিষিদ্ধ। এই আইন লঙ্ঘনের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানাগেছে কামারপুকুর, বাংগালীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের ফসলি জমির মাটির ৩ - ৭ ফুট উপরি অংশ ইট ভাটায় চলে যাচ্ছে। ইট ভাটার দালালরা মূলত কৃষকদের বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে বা ভুল বুঝিয়ে জমির মাটি স্বল্প মূল্যে খরিদ করে তা ইট ভাটায় বিক্রি করছে ভাটা মালিকদের কাছে। এতে লাভবান হচ্ছে ইটভাটার মালিক সহ একটি দালাল চক্র।
তবে লোভে পরে কৃষকদেরও ক্ষতি সহ নষ্ট হচ্ছে ভূমির পরিবেশ ও রাস্তাঘাট। তাই বছর প্রতি অবৈধভাবে ইটভাটার সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। উপজেলায় ৫/৭টি ব্যতীত বাকীগুলো অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে।
ইটভাটা মাটি বহন করে নিয়ে যাওয়া এক ট্রলীর ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায় এই মাটি কামারপুকুর বাগদোগরা ও আইসঢাল অসুরখাই এলাকায় নাজুমুল হাজির (এ এন বি) এ দুটো ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছি, তবে মাটি বা যেকোন ধরনের জিনিস টাকার বিনিময়ে বহন করাই তার পেশা বলে কেটে পড়ে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ধীমান ভূষণ বলেন, উর্বর মাটি তৈরি হতে অনেক বছর সময় লাগে। একটি উদ্ভিদের ১৬ প্রকার খাদ্যের মধ্যে মাটিতে ১৩ প্রকার খাদ্য উপাদান রয়েছে। ফসলি জমির উপরিভাগ ৪-৬ ইঞ্চি মাটি বেশী উর্বর। তবে এভাবে উর্বর মাটি ভাটায় চলে গেলে ভবিষ্যতে ২০-৩০শতাংশ হারে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায়ই অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জরিমানা আদায় করার পরেও তা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইসমাঈল জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি, তেমন আমার জানা নেই, তবে আমরা সরেজমিন বিষয়টি দেখব।