সংরক্ষিত বনায়নের গাছ কেটে তৈরী করা হয়েছে মাঠ। সেই মাঠের তপ্ত বালুতে শুকানো হচ্ছে কয়েক প্রজাতির মাছের পোনা কিংবা ছোট ছোট সামুদ্রিক মাছ। যা স্থানীয় ভাষায় বলা হয় শুঁটকি।
এসব সামুদ্রিক ছোট ছোট মাছের পোনা শুঁটকি হওয়ার পরে চলে যায় দেশের পাইকারি শুঁটকি ব্যবসায়ীদের কাছে। আর এ কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে থাকে শিশু থেকে বয়স্করা। তবে অভিযোগ রয়েছে সংরক্ষিত বনায়নে শুঁটকি পল্লী গড়তে কাজ করছে বড় একটি চক্র। এই চক্র স্থানীয় বন কর্মকর্তা, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড এবং প্রভাবশালীদের সাথে যোগসাজোশ করে কার্যক্রম চলমান রেখেছে। এর ফলে একদিকে উজাড় হচ্ছে বন অপরদিকে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। বনায়নের ভিতরে অস্থায়ী ঘর তুলে এমন কর্মযজ্ঞ চলমান থাকলেও বন রক্ষায় নিয়োজিত বন প্রহরীদের হদিস মেলেনি সেখানে।
সূত্র জানিয়েছে, বনায়নের ভিতরে শুঁটকির কর্মযজ্ঞ নভেম্বর মাসে শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারীতে শেষ হয়। এ কাজ চলমান রাখতে স্থানীয় বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশসহ সাত থেকে আট যায়গায় টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা লাগে। কারণ এটি সব যায়গার মোহনা। এই কাজে রফাদফা করেন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চরমোন্তাজ রেঞ্জের বন বিভাগের সংরক্ষিত সোনারচর বনায়ন লাগোয়া সী বিচে ১৫-২০ টি মাছ শুকানোর আবাসস্থল রয়েছে। এক একটি বাসার আওতায় রয়েছে ৩-৪ টি ট্রলার। প্রতিটি ট্রলারে আছে ছোট ফাঁসের অবৈধ জাল। এসব ট্রলারের জেলেরা সাগর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মনকে মন ছোট ছোট মাছের পোনা ধরে নিয়ে আসে। পরে এগুলো শুকিয়ে শুঁটকি করা হয়। আর এই বাণিজ্য বেগবান করার জন্য বনের গাছ কেটে জায়গা বের করা হয়েছে। এছাড়াও জেলেরা লাকড়ি হিসেবে গাছ কেটে ব্যবহার করছে। যার ফলে সংরক্ষিত বন উজার হচ্ছে। অথচ এসব বিষয়ে শুঁটকি ব্যবসায়ীদের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করলে প্রকাশ্যে কথা বলতে অপরগতা দেখিয়ে সোনারচর থেকে তড়িগড়ি করে সটকে পড়েন তারা। আর অভিযুক্তদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ না পাওয়ায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সোনারচরে শুঁটকি পল্লী করার কোন সুযোগ নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।